× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বন্ড কাস্টমস কর্মকর্তাদের নামে অভিযোগের পাহাড়

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৪৭ পিএম

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ফাইল আটকে রাখা, শিল্পমালিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অযথা হয়রানি নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কার্যালয়ে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ- পণ্য চালান স্থানান্তর, অতিরিক্ত গুদাম ব্যবহারের অনুমোদন, অডিট কার্যক্রমসহ রপ্তানি প্রক্রিয়ায় বন্ড কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নানামুখী হয়রানির শিকার হচ্ছেন তারা।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পোশাক কারখানা মালিক বলেন, ‘ঘুষ ছাড়া বন্ড কাস্টমস কর্মকর্তারা ফাইলে স্বাক্ষর করেন না। কেউ ঘুষ দিতে না চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করেন। সব ঠিকঠাক থাকার পরও নানা অজুহাতে ফাইল আটকে রাখেন দিনের পর দিন। অতিরিক্ত গুদাম ব্যবহার অনুমোদন, অডিট কার্যক্রম পরিচালনার সময় তারা নানাভাবে হয়রানি করছেন।’

নীতিমালা অনুসারে ১৪টি ডকুমেন্ট দাখিল করলেই বন্ড লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার কথা। বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সিং বিধিমালা-২০০৮ অনুসারে নতুন বন্ড লাইসেন্স ইস্যুর সময়সীমা ৩০ দিন। কিন্তু প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস দাখিলের পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লাইসেন্স পাওয়া যায় না। লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র বা ব্যবস্থাপনা পরিষদে যেকোনো পরিবর্তন, বন্ডেড ওয়্যারহাউস স্থানান্তর বা সম্প্রসারণ বা কোনোরূপ পরিবর্তন বা পরিবর্ধনের ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হয়। এসব পরিবর্তনের জন্য বন্ড লাইসেন্সধারীরা আবেদন করলেই ঘুষ দাবি করেন বন্ড কাস্টমস কর্মকর্তারা। ঘুষ না দিলেই নানাভাবে হয়রানি করা হয়। 

বিজিএমইএ নেতাদের দাবি, কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কর্মকর্তাদের অহেতুক হয়রানির কারণে তৈরি পোশাক শিল্পের সংকট আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে রপ্তানি মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে; যা বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাই কাস্টমস বন্ড পদ্ধতিগুলোর জটিলতা দূর করার জন্য কাস্টমস বন্ড কমিশনারকে একাধিকবার অনুরোধ জানিয়েছে বিজিএমইএ নেতারা। 

সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর বিজিএমইএর তৎকালীন সভাপতি ফারুক হাসানের নেতৃত্বে একটি দল সাবেক কাস্টমস বন্ড কমিশনার এ কে এম মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কাস্টমস বন্ড পরিষেবাগুলোর জটিলতা দূরীকরণ এবং সেবা প্রদানে বিলম্বের কারণ সমাধান করার আহ্বান জানান। কিন্তু এরপরও সেটি সমাধান হয়নি। বন্ড সুবিধা নিতে গিয়ে এখনও পোশাক কারখানা মালিকদের হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। কাস্টমস বন্ড কর্মকর্তাদের সময়ক্ষেপণের কারণে লোকসানের মুখে পড়ছেন পোশাক কারখানা মালিকরা। 

পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক অডিট কার্যক্রম অনুমোদনে বর্তমানে নির্ধারিত দলিলাদি যাচাই-বাছাই ছাড়াও আমদানি ও রপ্তানি চালানের ওজন পরীক্ষা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, অডিট কার্যক্রম অনুমোদনে তথ্য-উপাত্ত পুনঃযাচাই-বাছাইয়ে সময়ক্ষেপণ করেন কাস্টমস বন্ড কর্মকর্তারা। তাই অডিট কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রতা এড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বাধ্য হয়ে মোটা অঙ্কের ঘুষ দিতে হচ্ছে পোশাক শিল্প মালিকদের।

এদিকে শতভাগ রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা মালিকরা নানা অজুহাতে হয়রানির শিকার হলেও বিপরীতে যারা বন্ডের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাপড় আমদানি করে খোলাবাজারে বিক্রি করে দেয় ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে খুব একটা ব্যবস্থা নেন না কাস্টমস বন্ড কর্মকর্তারা। এ ক্ষেত্রে কাপড় চোরাকারবারিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে চোখ-কান বন্ধ করে রাখার কৌশল নেন তারা। লোক দেখানোর জন্য মাঝে মধ্যে কিছু চালান আটক করলেও অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়ে পরবর্তীতে কম জরিমানা করে ছেড়ে দেন।

সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি নগরীর সাগরিকা এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুটি কাভার্ডভ্যান ভর্তি কাপড় জব্দ করে বন্ড কাস্টমস কর্মকর্তারা। ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম। জব্দের সাত দিন পর ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় পণ্যভর্তি কাভার্ড ভ্যান দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে মোটা অঙ্কের লেনদেনের মাধ্যমে কোনো ধরনের শুল্ক আরোপ, জরিমানা বা সংশ্লিষ্ট থানায় ফৌজদারি অভিযোগ ছাড়াই পণ্যভর্তি কাভার্ড ভ্যান দুটি ছেড়ে দিয়েছে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রাম কার্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা।

এর সঙ্গে রাজস্ব কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজস্ব কর্মকর্তা ইমতিয়াজ আহমেদ দাবি করেন, ‘শুনানির পর জরিমানা করেই কাপড়গুলো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’ কাপড়গুলো কোন প্রতিষ্ঠানের? ওই প্রতিষ্ঠানকে কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তথ্য দিতে রাজি হননি। উল্টো প্রশ্ন করেন এই তথ্য দিয়ে আপনি কী করবেন?

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা