× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুই এমপির দ্বন্দ্বে দুই উপজেলা তটস্থ

সাইদ মেমন, বরিশাল

প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৪১ পিএম

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১২:৫১ পিএম

বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

দুই এমপির অনুসারীদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে বরিশালের দুটি উপজেলা। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই ঘটছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। হামলা পাল্টা-হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট অনেকটাই নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এসব ঘটনায় পঙ্গু হওয়া ছাড়াও প্রাণহানি পর্যন্ত ঘটেছে।

পাল্টাপাল্টি মামলায় সাধারণ মানুষসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ রয়েছেন কারাগারে। এই চিত্র হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার। আর এসব সংঘাতময় দ্বন্দ্বের মূলে রয়েছেন বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ নাথ এবং সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। তাদের বিরোধের জের ধরে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চলতে থাকা নানা অঘটনে বারবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দুই উপজেলার পরিবেশ। যেকোনো সময় যেকোনো ঘটনার আশঙ্কায় তটস্থ থাকেন এখানকার সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পঙ্কজ নাথ এবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী শাম্মী আহমেদ একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার কারণে ছিটকে পড়েন। তবে পরে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হয়েছেন তিনি। হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার তিন থানা নিয়ে এই আসন গঠিত। থানা তিনটি হলোÑ হিজলা, মেহেন্দিগঞ্জ ও কাজিরহাট। 

বরিশাল-৪ আসন একসময় বিএনপির ঘাঁটি ছিল। ১৯৯৬ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সেখানে প্রতিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে পঙ্কজ নাথ এমপি নির্বাচিত হয়। পরেরবারও তিনি এমপি হন। 

এলাকার সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, দ্বন্দ্ব কেবল পঙ্কজ ও শাম্মীর নয়। এখানকার দ্বন্দ্ব আরও 

দুই স্থানীয় নেতার সঙ্গে এমপি পঙ্কজের। হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার এবং মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র কামালউদ্দিন খানের সঙ্গে পঙ্কজের দ্বন্দ্ব বেশ পরিষ্কার। ওই দুই নেতাই শাম্মীকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করছেন। 

দ্বন্দ্বের নেপথ্যে

চর ও মাছঘাট- প্রকাশ্য রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের নেপথ্যে রয়েছে এ দুটি অরাজনৈতিক বিষয়। তবে অরাজনৈতিক হলেও দুটির সঙ্গেই অর্থনৈতিক বিষয় জড়িত। যারা প্রভাব বিস্তার করতে পারে তাদের দখলেই থাকে চর ও মাছঘাট। সেখান থেকে আসা মোটা অঙ্কের অর্থ পকেটস্থ করা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন পঙ্কজ নাথসহ দুই উপজেলার নেতারা। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।

হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের আরও কয়েক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, পঙ্কজ নাথ বলেছিলেন তার মনোনয়ন দলীয় সভানেত্রীর হাতেও নেই। এ ধরনের মন্তব্য করে তিনি দলীয় সভানেত্রীর বিরাগভাজন হন। যে কারণে ২০১৯ সালের অক্টোবরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে তাকে নিষ্ক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দুই উপজেলায় বরিশাল জেলা নেতৃত্বের সমর্থকরা নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পান। কিন্তু অনেক আওয়ামী লীগ নেতা এমপির সমর্থনপুষ্ট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয় পান। এ ঘটনায় জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে পঙ্কজের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এমপি পঙ্কজ ও পুলিশ কর্মকর্তার একটি অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মেহেন্দিগঞ্জ পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল খানকে কোপানোর নির্দেশ দিতে শোনা যায়। ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি পঙ্কজকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। তবে এর জন্য শাম্মী আহমেদকে দায়ী করেন পঙ্কজ। সেই থেকে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, যা দিনে দিনে তীব্র হতে থাকে। 

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, দল থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর শুরুর দিকে পঙ্কজের অনুসারীরা কিছুটা নীরব হয়ে যায়। দুই উপজেলায় সক্রিয় হয়ে ওঠেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও তাদের অনুসারীরা। পরে তারা শাম্মী আহমেদের অনুসারী হয়ে দুই উপজেলায় প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। 

গত নির্বাচনে পঙ্কজ নাথকে বাদ দিয়ে শাম্মী আহমেদকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে একেবারে কোণঠাসা হয়ে পড়েন পঙ্কজের অনুসারীরা। দুই উপজেলায় একচ্ছত্র আধিপত্য শুরু হয় শাম্মী অনুসারীদের। এরই মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন পঙ্কজ। এরপর আবার দুই উপজেলায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা শুরু করে পঙ্কজের অনুসারী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কিছুদিনের মধ্যে শাম্মী আহমেদ সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার অনুসারীরাও প্রভাব বিস্তার শুরু করে। এ নিয়ে দুই উপজেলায় প্রায়ই হামলা পাল্টা-হামলা ও সংঘর্ষ বাধে। এভাবেই বিবদমান দুটি পক্ষ সৃষ্টি হয়ে এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে রেখেছে। যার জেরে গত ১৬ মার্চ নিহত হন জামাল মাঝি নামে এক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।

হিজলা থানার ওসি জুবাইর আহম্মেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে হামলা-সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় ১৫-২০টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় তিন থেকে চারশ’ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ আসামি হয়েছেন। 

মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি ইয়াসিনুল হক বলেন, তার থানায় মামলা কম। দুই-তিনটি মামলা রয়েছে। তবে প্রতিদিনই একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ নিয়ে হাজির হয়। 

কাজিরহাট থানার ওসি মো. শাহবুদ্দিন প্রতিদিনের বলেন, তার থানায় কতটি মামলা রয়েছে তা কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবেন না। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। 

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, দুই নেতার দ্বন্দ্বের কারণে তাদের দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। গত ২ মার্চ থেকে পালপাড়া গ্রামে দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে হামলা পাল্টা-হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ধূলখোলা ইউনিয়নের মাঝের চর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মো. জসিম জানান, গত ১৬ মার্চ জামাল মাঝি হত্যার পর থেকে মাছঘাটের জেলেরা অনেক দিন পর্যন্ত মাছ শিকার করতে যাননি। প্রতিদিন এ ঘাটে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার মাছ ক্রয়-বিক্রয় হয়।

জসিম বলেন, জামাল মাঝি হত্যার ঘটনার পর থেকে সবাই আতঙ্কে রয়েছে। কাকে কখন গ্রেপ্তার করে, প্রশাসন এসে কী জিজ্ঞাসাবাদ করে- এই ভয়ে সবাই দূরে সরে আছে। 

ধূলখোলা ইউনিয়নের বাতুয়া গ্রামে অবস্থান নেওয়া বেদে সর্দার মোতালেব হোসেন বলেন, তাদের বহরে ৬৫ নৌকায় দেড় শতাধিক মানুষ বাস করে। প্রায় দিনই তারা মাছ ধরতে যেতে পারেন না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কষ্টে আছেন। রাতে ঠিকমতো নৌকায় ঘুমাতেও পারেন না। সবসময় আতঙ্কে থাকেন। চরের মধ্যে আলো জ্বলতে দেখলেই আঁতকে ওঠেন।

ধূলখোলা ইউনিয়নের আলীগঞ্জ বাজারের ফল বিক্রেতা বশিরউদ্দিন বলেন, দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ ও হত্যার ঘটনায় লোকজন ভয়ে বাজারে কম আসে। তাই তাদের বেচাকেনা কম। বিভিন্ন ঘটনার জেরে বাজারের দুই শতাধিক ব্যবসায়ী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত বলে জানান বশিরউদ্দিন। 

ধূলখোলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, মেহেন্দিগঞ্জের সলদি গ্রামের কিছু সন্ত্রাসী সবসময় ধূলখোলা ইউনিয়নে লুটপাট করে। পঙ্কজ নাথ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এসব সন্ত্রাসী লুটপাট করতে পারেনি। ড. শাম্মী সংরক্ষিত আসনের সদস্য হওয়ার পর আবার লুটপাট শুরু হয়েছে। অন্য ইউনিয়নের লোক নিয়ে এসে দখল ও লুটপাটের চেষ্টা করে ধূলখোলার ইউপি চেয়ারম্যান জামালউদ্দিন ঢালী। তার এ কাজে বাধা দেওয়ার কারণেই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। 

একসময় পঙ্কজ নাথের ঘনিষ্ঠ ও বর্তমানে শাম্মীর অনুসারী মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, যখন পঙ্কজ নাথ নৌকার মনোনয়নে এমপি ছিলেন তখন তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তিনি এখন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। তাই আমি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের পক্ষে রয়েছি। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সবাই শাম্মী আহমেদের পক্ষে রয়েছেন। 

দুই এমপির দ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেÑ এ কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, দ্বন্দ্ব অবশ্যই মিটিয়ে ফেলা উচিত। তবে এ দ্বন্দ্ব মেটাতে পারবে শুধু বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ টিপু সিকদার বলেন, আমার সঙ্গে এমপি পঙ্কজের আদর্শের মিল হয় না। তাই তার সঙ্গে আমার দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তবে আমরা কেউ কাউকে ছোট করে কথা বলি না। 

দ্বন্দ্ব-সংঘাতের বিষয়ে তিনি বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব ঘটনা ঘটে। যারা করে তারাই ভোগে। আমি এসবের মধ্যে নেই। যারা দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়িত তাদের নিয়ে বসা উচিত। কী নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তা জেনে সমাধান করলেই সংঘাত বন্ধ হবে। 

হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বড়জালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন হাওলাদার বলেন, এটা স্বার্থের দ্বন্দ্ব। কে বড় নেতা- সেই নিয়ে লড়াই। এ নিয়ে হানাহানি লেগেই রয়েছে। এতে নেতাদের তো কিছু হয় না। মরে গরিব। এ অবস্থা থেকে বের হওয়া উচিত। এর জন্য বড় নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আরও বড় ঘটনা ঘটে যাবে। 

কাজীরহাট থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় চন্দ্র বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তিনি তিনটি মামলার আসামি। গ্রামে না থাকার পরও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথের নির্দেশে তার অনুসারীরা মামলা দিয়েছে। 

সঞ্জয় চন্দ্রের অভিযোগ, পঙ্কজ নাথ দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের খেলায় মেতে রয়েছেন। 

বরিশাল-৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি অ্যাডভোটেক আফজালুল করিম। দুই নেতার দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক কোনো দ্বন্দ্ব নয়। স্বার্থ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব ঘটনা ঘটছে। যা প্রতিরোধে পঙ্কজ নাথ ও শাম্মী আহমেদ ব্যর্থ হয়েছেন। 

ড. শাম্মী আহম্মেদ এ বিষয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, আওয়ামী লীগে থেকে অব্যাহতি পাওয়া স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। তিনি যদি আওয়ামী লীগের কোনো নেতা হতেন, তাহলে তার সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি আসত। তিনি তো আওয়ামী লীগেরই কেউ না। 

শাম্মী আরও বলেন, হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করছে পঙ্কজ নাথ। তার হাত থেকে রক্ষা পেতে ওই নেতাকর্মীরা আমার কাছে এসেছেন। 

শাম্মী আরও বলেন, আমি তো এখানে এসেছি এক বছর হয়নি। তার আগে যে ১৩টি খুন হয়েছে সেটা কার সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে হয়েছে? সেসব খুনের বিচারও তো হয়নি। জামাল মাঝি হত্যার পর আমি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছি। কী কারণে খুন হয়েছে, কারা করেছে, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসুক। আমি তো কাউকে দোষ দেইনি। কিন্তু তিনি কি করলেন? নাম ধরে বলে দিলেন। তদন্ত হওয়ার আগেই তিনি কিভাবে জানলেন? এ থেকেই স্পষ্ট হয়, এসব হত্যাকাণ্ড কার পরিকল্পনার ফল।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ বলেন, এ ধরনের ঘটনা তো আগে ঘটেনি। ড. শাম্মী সংরক্ষিত সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকে এসব ঘটনা ঘটছে। তিনিই সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন। জেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার পরামর্শে তাকে অপদস্থ করার চেষ্টা করতে গিয়ে এসব ঘটনা ঘটিয়েছেন শাম্মী। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ড. শাম্মী ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নিবৃত হতে হবে বলে জানান পঙ্কজ নাথ।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা