নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:২৯ পিএম
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৪ পিএম
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সড়কে শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে নেমেছেন বিসিক শিল্পাঞ্চলের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেড নামের কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক। রবিবার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ঢাকা-মুন্সীগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি, বাঁশ ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এতে সড়কটিতে অন্তত দুই কিলোমিটার এলাকায় যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিল্প পুলিশ ও ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ সড়কে অবস্থান করছে। তবে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখা যায়নি। এদিকে কারখানা তিন দিন বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ। এর আগে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি এ কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেছিল। এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও (দুপুর ১টা) বিক্ষোভ চলছিল।
কারখানার শ্রমিকরা জানিয়েছেন, গত ৮ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত কাজের পর কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ঈদের আগে বোনাস পেলেও মার্চের বেতন বকেয়া ছিল। কারখানার মালিক ঈদের আগেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মার্চের বেতন পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা তা পাননি।
ক্রোনী গ্রুপের রপ্তানিমুখী এ পোশাক কারখানাটিতে অন্তত ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন বলে জানিয়েছে শিল্প পুলিশ।
কারখানাটির সুইং অপারেটর মো. মাসুদ জানান, এপ্রিলের ৮ তারিখ কারখানা বন্ধের সময় মোবাইলে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেনি মালিকপক্ষ। গত ৮ মাস ধরে বেতন নিয়ে এভাবে গড়িমসি করছে মালিকপক্ষ। তাই বেতনের দাবিতে আমরা রাস্তায় নেমেছি। বেতন ঢুকল এ আশায় ঈদের দিনও বারবার মোবাইল চেক করেছি। কিন্তু বেতন আসেনি। ঈদের সময় বেতন পাইনি, তাই এবার আমাদের ঈদে আনন্দ ছিল না। অন্তত অর্ধেক বেতন দিলেও তো হতো।
কারখানার শ্রমিক সুমাইয়া আক্তার বলেন, আমাদের ক্রোনীর শ্রমিকদের ঈদ বা উৎসব নেই। প্রতি মাসে বেতনের জন্য রাস্তায় নামতে হয়। বাসের টিকেট কেটেও গ্রামের বাড়ি যেতে পারিনি, টাকা নেই, বাড়ি গিয়ে কী করব?। আমাদের ঈদের আনন্দ শেষ করে দিয়েছে ক্রোনীর মালিক। আমরা কী মানুষ না অন্য কিছু?।
ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তছলিম উদ্দিন জানান, শ্রমিকরা মার্চের বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। তারা কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা করেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ কাজ করছে। অবরোধের কারণে অন্তত দুই কিলোমিটার যানজট দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করছি। সমস্যা সমাধানে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
ক্রোনী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসলাম সানি বলেন, ঈদের আগে সব শ্রমিককে বোনাস দিয়েছি। শিপমেন্ট ঠিকমতো না হওয়ায় মার্চের বেতনটা দিতে পারিনি। আমরা আগামী বুধবারের মধ্যে সবার বেতন পরিশোধ করে দেব।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।