× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পৌনে ৮ কোটি টাকা, ভাঙল অতীতের সব রেকর্ড

মধ্যাঞ্চলীয় অফিস

প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৪২ এএম

আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ১২:০৩ পিএম

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পৌনে ৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে টাকা গণনা শুরু করলে শেষ হয় রাত ২টার দিকে। প্রবা ফটো

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পৌনে ৮ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। শনিবার সকালে টাকা গণনা শুরু করলে শেষ হয় রাত ২টার দিকে। প্রবা ফটো

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে এবার রেকর্ড ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে; যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ২২০ জনের একটি দল দীর্ঘ সাড়ে ১৮ ঘণ্টায় এ টাকা গণনা কাজে অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়াও দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদের ১০টি লোহার দানবাক্স খুলে পাওয়া রেকর্ড ২৭ বস্তা টাকা মসজিদের দোতলায় এনে গণনার কাজ চলে। সকাল ৯টায় শুরু হয় শেষ হয় রাত ২টার দিকে এ টাকা গণনার কাজ। 

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পাগলা মসজিদের দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজ শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এ তথ্য প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করে জানান, পাগলা মসজিদে এবার অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। টাকাগুলো পুলিশি নিরাপত্তায় রূপালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখায় পাঠানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। বর্তমানে সেটি সম্প্রসারিত হয়ে ৩ একর ৮৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, সিন্দুক খোলা কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজসহ কমিটির সদস্য, প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ ও পুলিশের উপস্থিতিতে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দান সিন্দুকগুলো খোলা হয়।
 
টাকা গণনার কাজে কিশোরগঞ্জের জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মহুয়া মমতাজ, রূপালী ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) রফিকুল ইসলাম, সিবিএ নেতা মো. আনোয়ার পারভেজসহ মাদ্রাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নেন।

এবার ৪ মাস ১০ দিন পর মসজিদের ১০টি দানবাক্স খুলে ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় রেকর্ড ৬ কোটি ৩২  লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গিয়েছিল। পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে , ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদে ৯টি দানবাক্স থাকলেও দানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও একটি অস্থায়ী দান সিন্দুক বাড়ানো হয়েছে। এই নিয়ে পাগলা মসজিদে দানবাক্সের সংখ্যা ১০টিতে দাঁড়াল।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স’ নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়। এ মসজিদে দান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়। মুশকিল আসানসহ মিলে রোগব্যাধি থেকে মুক্তি। এই বিশ্বাসে প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ পাগলা মসজিদে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। দূর-দূরান্ত থেকে আসা অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন। তাদের বিপুল দানে মাত্র তিন মাসেই পূর্ণ হয়ে যায়। 

অন্যদিকে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কুরআন শরিফ ইত্যাদি নিলামঘরে জমা দিতে হয়। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দানসিন্দুকে নগদ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার দান করা ছাড়াও মসজিদের নিলামঘরে নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন। 
মসজিদের দান থেকে পাওয়া এসব অর্থ সংশ্লিষ্ট মসজিদসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। এ ছাড়া করোনাকালে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককেও অনুদান দেওয়া হয়েছিল এ দানের টাকা থেকে।

কিশোরগঞ্জ যুব উন্নয়ন পরিষদের আমিনুল হক সাদী বলেন, সওয়াবের নিয়তে মসজিদে অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে দান-খয়রাত করে থাকেন। সঠিক নিয়তে দান করলে মানুষের ইচ্ছা, মনের আশা ও মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। সেই বিশ্বাস থেকে মানুষ এখানে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশুসহ বিভিন্ন জিনিস দান করেন।

পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র মো. পারভেজ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের দানের টাকায় আন্তর্জাতিক মানের একটি ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। কমপ্লেক্সটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যে অন্যতম স্থাপত্য হিসেবে বানানো হবে। এ জন্য আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ থেকে ১২০ কোটি টাকা। সেখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। ২০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ হাজার নারীর নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে।

মসজিদ কমিটি ও কমপ্লেক্সের সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান,  ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স ও মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়নে প্রাথমিক কর্মকাণ্ড চলমান। শিগগির আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু হবে। যার নাম হবে ‘পাগলা মসজিদ ইসলামিক কমপ্লেক্স’। 
শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা