পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক
মধ্যাঞ্চলীয় অফিস
প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৩৪ পিএম
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১১ এএম
টাকা গণনায় পাগলা মসজিদ মাদরাসার ১৩৮ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ১৯৮ জন কাজ করছেন। তাদের সহায়তা করছেন মসজিদ-মাদরাসার আরও ৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রবা ফটো
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দশটি দানবাক্স থেকে এবার ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। গণনা শেষের আগেই দেখা গেছে, দানের টাকা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গণনা চলছিল এবং এরই মধ্যে টাকার পরিমাণ সাত কোটি ছাড়িয়েছে। এসবের সঙ্গে মিলেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়নাও।
জানা যায়, সকাল সাড়ে ৭টায় মসজিদটির ১০টি দানসিন্দুক খোলার মধ্য দিয়ে টাকা গণনার কাজ শুরু করা হয়।
টাকা গণনায় পাগলা মসজিদ মাদরাসার ১৩৮ জন ছাত্র এবং রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে ১৯৮ জন কাজ করছেন। তাদের সহায়তা করছেন মসজিদ-মাদরাসার আরও ৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারী।
এবার চার মাস ১১ দিন পর মসজিদটির দানসিন্দুক খোলা হয়েছে। এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর দানসিন্দুকগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় সর্বোচ্চ ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এবার টাকা গণনার আগেই গেল বছরের রেকর্ডটি অতিক্রম করল।
শনিবার সকালে মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এবং সিন্দুক খোলা কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রট কাজী মহুয়া মমতাজের উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে মসজিদের দশটি দান সিন্দুকের সবগুলো খোলা হয়।
দানসিন্দুক থেকে টাকা প্রথমে বস্তায় ভরা হয়। এরপর গণনার জন্য মসজিদের দোতলা নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মেঝেতে ঢেলে দেওয়ার পর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ।
কথিত রয়েছে যে, এ মসজিদে দান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়। মুশকিল আসানসহ মিলে রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি। এই বিশ্বাস থেকে স্থানীয়রা ছাড়াও দূর-দূরান্তের মানুষও পাগলা মসজিদে দান করতে ছুটে যান।
পাগলা মসজিদে মানুষ টাকাপয়সা, স্বর্ণালঙ্কার, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কোরআন শরিফ ইত্যাদি দান করেন। এর মধ্যে টাকাপয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার মসজিদের দানসিন্দুকগুলোতে জমা পড়ে।
অন্যদিকে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, ফল-ফলাদি, কোরআন শরিফ ইত্যাদি নিলামঘরে জমা দিতে হয়। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ দানসিন্দুকে নগদ টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার দান করা ছাড়াও মসজিদের নিলামঘরে নানা ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।