কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০৬ পিএম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৬ পিএম
গুলিবিদ্ধ শাহেদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রবা ফটো
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সরকারি জলমহালের দখলদারদের হামলায় জেলা ছাত্রলীগ নেতাসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছে একজন। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ, কুষ্টিয়া শহরের মোল্লাতেঘরিয়া এলাকার শাহেদ, পার্থ, রাজন, রাজীব ও জয়। এদের মধ্যে শাহেদ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সুতপা রায় বলেন, ‘শাহেদের এক্সরে রিপোর্টে তার বাঁ পাজরের ভেতরে ছররা গুলির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
দৌলতপুর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালিয়া এলাকায় ১২.১৮ একরের একটি সরকারি জলমহাল (বোয়ালিয়া বিল) রয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা বহু বছর ধরে ওই বিলে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে আসছে। বাংলা ১৪৩১ সালের জন্য কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন বিলটি দখলমুক্ত করতে ইজারার সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিলের ইজারা পান বোয়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ।
গত পহেলা বৈশাখ দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কমকর্তার পক্ষে সার্ভেয়ার আহসানুল হক বিলের দখল বুঝিয়ে দেন চ্যালেঞ্জকে। পরে ২ বৈশাখ চ্যালেঞ্জ ও তার সহযোগীরা বিলে মাছের পোনা ছাড়েন।
শুক্রবার বিলের পরিচর্যাকাজে যান ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক। সেখানে দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার জন্য রান্নারও আয়োজন করা হয়। এ সময় বিলের অবৈধ দখলদাররা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা ফিরোজ হোসেন বলেন, ‘৩০ থেকে ৪০ জন লোক হঠাৎ করে চ্যালেঞ্জ ও তার লোকদের ওপর হামলায় চালায়। এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়।’
জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ বলেন, ‘স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুল মতিন ও মহিউদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বোয়ালিয়া বিল ভোগদখল করে আসছিলেন। জেলা প্রশাসন বিলটি ইজারার জন্য দরপত্র আহ্বান করে। এ দরপত্রে অংশ নিয়ে বিলের ইজারা পাই। শুক্রবার ওই বিলের পরিচর্যার কাজে গেলে আব্দুল মতিন ও মহিউদ্দিনের ক্যাডাররা আমাদের ওপর হামলা করে।’
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বোয়ালিয়া বিলের ইজারাদারের ওপর হামলার ঘটনার খবর পাওয়ার পর সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে সেখানে গুলির ঘটনা ঘটেছে কি না, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
দৌলতপুর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আহসানুল হক বলেন, ‘গত পহেলা বৈশাখ বিলের দখল বৈধ ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় অবৈধ দখলদার আব্দুল মতিন ও মহিউদ্দিনকেও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তারা কেউ আসেননি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (উএনও) মো. ওবাইদুল্লাহ বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে বিলটি এ বছর ইজারা দেওয়া হয়েছে। সেখানে কেন হামলার ঘটনা ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’