চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৫৬ পিএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৭ পিএম
বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ফাইল ছবি
জলদস্যুতার জন্য চিহ্নিত অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করেছে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টার দিকে অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করেছে।
জাহাজটির মালিকপক্ষ এসআর শিপিং লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সবকিছু ঠিক থাকলে এমভি আব্দুল্লাহ ২২ এপ্রিল দুবাইয়ের হারমিয়া বন্দরে গিয়ে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ সময় আজ দুপুর ১২টার দিকে অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা অতিক্রম করেছে। বর্তমানে ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে গালফ অব এডেনের দিকে যাচ্ছে। আমাদের জাহাজটিকে এখনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ নিরাপত্তা দিচ্ছে। ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেই জাহাজের ক্যাপ্টেন জাহাজের গতি এবং কোর্স পরিচালনা করছেন।’
সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে কিছু কিছু এলাকাকে অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অরগানাইজেশন (আইএমও)। সোমালিয়া উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রপথ তেমনই একটি অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। আইএমও নিয়ম অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে অতিঝুঁকিপূর্ণ এলাকা (হাই রিস্ক এরিয়া) দিয়ে জাহাজ চলাচলের সময় বেস্ট ম্যানেজমেন্ট প্র্যাকটিসের (বিএমপি) আওতায় কিছু নিয়ম মানা হয়।
এর আগে গত ১২ মার্চ বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুর কবলে পড়ে এমভি আব্দুল্লাহ। এরপর জাহাজটি ছিনতাই করে জলদস্যুরা ১৪ মার্চ দপুর ২টার দিকে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যায়। সোমালিয়ান উপকূলে দীর্ঘ ৩১দিন জিম্মিদশায় থাকার পর ১৩ এপ্রিল মুক্ত হন নাবিকরা। মুক্তিপণ দেওয়ার পর ১৩ এপ্রিল রাত ৩ টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। এরপর জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হন ২৩ নাবিক। ছাড়া পাওয়ার পরপরই কাছাকাছি থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নিরাপত্তায় নিয়োজিত হয়।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার পর এক ভিডিওবার্তায় জাহাজের সব যন্ত্রপাতি সচল রয়েছে জানিয়েছেন জাহাজটির প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম সাইদুজ্জামান। ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, আমি এমভি আব্দুল্লাহ’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এসএম সাইদুজ্জামান। ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ আমাদের জাহাজটি সোমালিয়ান জলদস্যুরা হাইজ্যাক করে। ৩২ দিন জিম্মিদশায় থাকার পর ১৩ এপ্রিল রাতে জলদস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যায়। আমরা জাহাজে এখন ২৩ জন নাবিক রয়েছি। সবাই সুস্থ এবং ভালো আছেন।
তিনি আরও বলেন, জাহাজের মূল ইঞ্জিনসহ সব যন্ত্রপাতি সচল রয়েছে। জাহাজের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের জন্য তিনটি জেনারেটর রয়েছে, সবগুলো সচল অবস্থায় আছে। এ ছাড়া জাহাজে বয়েজ শেষ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি এবং লুব অয়েল রয়েছে। জাহাজে পর্যাপ্ত খাবার এবং সুপেয় পানি রয়েছে।