এস এম রানা, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ২২:০৭ পিএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১৬ এএম
এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ ঘিরে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় একটি প্লেন চক্কর দিয়েছে। এই সময় প্লেন থেকে পানিতে কিছু পড়ার মতো তিনটি শব্দ শোনা গেছে। কিন্তু কী পড়েছে সেটা খেয়াল করতে পারিনি। আর প্লেন আসার আগেই আমাদের লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রেখেছিল জলদস্যুরা। তাদের একজন দোভাষীর মতো করে বাংলায় উচ্চারণ করে ‘হাত নাড়ো’। এই শব্দটি কোনো বাঙালি নাবিক উচ্চারণ করেনি। এক জলদস্যুদের উচ্চারিত শব্দ। তারা নাবিকদের কাছ থেকে শব্দটি শিখে নিয়েছিল।
জিম্মি হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুমুক্ত করতে ডলার দেওয়া হয়েছে কি না তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। মালিকপক্ষ কিংবা সরকার কিছুই স্বীকার করছে না, তখনই প্রতিদিনের বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় জাহাজে নাবিকদের সঙ্গে। নাবিকদের একজন নাম প্রকাশ হবে না শর্তে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার সময় একটি প্লেন এমভি আবদুল্লাহ ঘিরে চক্কর দেওয়া শুরু করে। এর আগেই আমাদের ২৩ জনকে লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে জলদস্যুরা। তারা আমাদের কাছ থেকে ‘হাত নাড়ো’ শব্দটি শিখে নেয়। এরপর যখন জাহাজটি চক্কর দিতে শুরু করে তখন ‘হাত নাড়ো’ শব্দ উচ্চারণ করে জলদস্যুদের একজন। আমরা শুধু দাঁড়িয়েই ছিলাম।
ওই সময় জাহাজের আশপাশে জলদস্যুদের ইঞ্জিন চালিত বোট ছিল। সেখানেও অবস্থান নিয়েছিল জলদস্যুরা। একপর্যায়ে তিনটি শব্দ শুনতে পাই। উপর থেকে পানিতে কিছু পড়লে যেমন শব্দ হয়, তেমন শব্দ। তবে কে কী ফেলেছে সেটা বুঝতে পারিনি বা দেখিনি। এই কারণে বস্তা পড়েছে কি না সেই কথা বলতে পারছি না।
ওই নাবিক আরও বলেন, সাড়ে ১১টার পর প্লেনটি চলে যায়। নাবিকেরাও জাহাজে জঠে আসে। আমাদের ব্রিজে পাঠিয়ে দেয়। কেউ কেউ রুটিন ডিউটিতে চলে যায়। রাতে আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। একপর্যায়ে ঘুম ভাঙে। সহকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারি, জলদুস্যরা জাহাজ থেকে নেমে গেছে। এরপর আমরা পুরো জাহাজ ঘুরে দেখি। নিশ্চিত হই, কোনো জলদস্যুে নেই জাহাজে। তারপর জাহাজের নোঙর তোলার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু হয় ক্যাপ্টেনের নির্দেশে। এরপর অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সেনারা জাহাজে উঠে আসে। তারা প্রয়োজনীয় কিছু সহযোগিতা করেছে। ছবি তোলেছে। তারপর স্কট দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সহযোগিতা করছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে লাইন ধরে যেসব নাবিক দাঁড়িয়ে আছেন এবং তাদের পোশাকে এস আর শিপিং লেখা আছে, সেই ভিডিও তাদের কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই নাবিক বলেন, ‘হ্যাঁ, সেই ভিডিও আমাদের। আর যে প্লেনটি উড়ছে, সেটিও আমি দেখেছি। শুধু বস্তা পানিতে পড়তে দেখিনি।’