× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দিনাজপুরে এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহে একসঙ্গে নামাজ পড়লেন ৬ লাখ মুসল্লি

দিনাজপুর প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৪ পিএম

আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৪৯ পিএম

প্রাব ফটো

প্রাব ফটো

এশিয়ার সর্ববৃহৎ ঈদগাহ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দানে এবারও একসঙ্গে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন বলে দাবি আয়োজকদের। প্রখর রোদ আর তীব্র দাবদাহেও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে বৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসল্লিরা।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) উত্তরের ১৬ জেলাসহ সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনার ও মাঠ গোর-এ শহীদ ময়দানে এবার ঈদের নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন ফরিদপুর ও চুয়াডাঙ্গার কয়েকজন মুসল্লি।

সকাল থেকে মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দান। দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাতে অংশ নিতে সমবেত হয় অসংখ্য মানুষ। প্রায় ২২ একর জায়গা কানায় কানায় পূরণ হয়। এ ঈদের জামাতে দলে দলে সমাগম ঘটে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লির। ঈদের জামাত পরিণত হয় মুসল্লিদের মিলন মেলায় । সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের জামাত। নামাজে অংশ নেয় প্রধান বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ, পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদসহ প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষাধিক মুসল্লি।

ঢাকা,চট্রগ্রাম,কুষ্টিয়া,সাতক্ষীরা,টাঙ্গাইল,বগুড়া,রংপুর,নীলফামারী,জয়পুরহাটসহ আশপাশের অনেক জেলা এবং পাশের দেশ ভারত থেকেও মুসল্লিরা অংশ নেয় জামাতে। এশিয়া উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জামাতে নামাজ আদায় করতে পেতে আনন্দে আপ্লুত মুসল্লিরা।

রাজধানী ঢাকা থেকে আগত ৬০ বছর বয়সি মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এত বড় জামাতে একসঙ্গে নামাজ আদায় এই প্রথম। জানিনা আর কখনও এই সুযোগ হবে কি না। এখানে নামাজ আদায় করতে পেরে আমি আনন্দিত ও গর্বিত।

ভারত থেকে এই ঈদগাহ মাঠে ঈদেও নামাজ আদায় করতে আসা মোজাফ্ফর মোল্লা বলেন, অনলাইন এবং টিভি চ্যানেলে এই বড় ঈদগাহর কথা জেনেছি। দুই বছর ধরে নিয়ত করেছিলাম এই ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করব। তাই এসে এবার নামাজ আদায় করলাম।
চট্রগাম থেকে এই ঈদগাহে নামাজ আদায় করলেন মো. ইউসুফ আলী নামে একজন। তিনি গতকাল শ্যামলী পরিবহণের মাধ্যমে এসে  সম্পর্কিত ভাতিজির বাড়িতে ছিলেন। আজ চলে যাবেন।

দিনাজপুর পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য বড় এই ঈদ জামাতে নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ঈদগাহ মাঠজুড়ে ছিল চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ।পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব,আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করে। সকাল ৭টা থেকে মুসল্লিরা মাঠে প্রবেশ শুরু করেন। মাঠের চতুরদিকে তৈরি ১৭টি প্রবেশ পথে মুসল্লিদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। মাঠে ছিল ৫টিঁ ওয়াচ টাওয়ার,পুলিশ ও র‌্যাবের অস্থায়ী ক্যাম্প। ৩০টি সিসিটিভি ক্যামেরা এবং ডোনের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটরিং ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাইক বসানো ছিল ১১০টি, ছিল স্বাস্থ্য ক্যাম্পের ব্যবস্থা। তৈরি করা হয় ২৫০টি অজুখানা এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও মেডিকেল ক্যাম্প ।

এই ঈদের নামাজ পড়ান ও মোনাজাত করান ইমামতি আলহাজ মাওলানা শামসুল হক কাসেমি। তিনি বলেন, ইমামকে সহযোগিতা করার জন্য বিভিন্ন মসজিদ এবং মাদ্রাসা থেকে নিয়োজিত ছিল পাঁচ শতাধিক মুক্কাবির। ছিল স্বাস্থ্য ক্যাম্পের ব্যবস্থা। তৈরি করা হয় ২৫০টি অজুখানা এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা। কয়েকদিন প্রচন্ড তাপদাহ গেলেও আল্লাহর রহমতে আজ আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। মুসল্লিরা স্বস্তি পেয়েছেন, নামাজ আদায়ে।
দেশ-জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে এই ঈদের নামাজে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে আনন্দে আপ্লুত হয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন, প্রধান বিচারপতি (ভারপ্রাপ্ত) এম এনায়েতুর রহিম।

তিনি বলেন, লাখ লাখ মানুষের সঙ্গে জামাতে অংশগ্রহণ করতে পারা আমি মনে করি  আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রড় নিয়ামত। আল্লাহ যেন আমাদের এই জামাতকে কবুল করেন এবং আমাদের হেফাজত করেন। দেশ-জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি যেন আল্লাহ বর্ষিত করেন।

উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ ঈদের এই জামাত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই ঈদগাহ মাঠের রূপকার ও উদ্যোক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি।
উপমহাদেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ ঈদের এই জামাত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এই ঈদগাহ মাঠ তৈরির উদ্যোক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি।

তিনি বলেন, দৃষ্টিনন্দন এই ঈদগাহ মিনার এ রয়েছে ৫২টি গম্বুজ। প্রধান গম্বুজের সামনে রয়েছে মেহরাব, ৪৭ ফুট উচ্চতা ইমাম দাঁড়ানোর স্থান। এর পাশাপাশি রয়েছে ৫১টি গম্বুজ। এছাড়াও ৫১৬ ফুট দৈর্ঘেও ৩২টি আর্চ নিমার্ণ করা হয়েছে। প্রতিদিন গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি। এবার প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছে। আগামিতে এই ঈদ গাহ মাঠে মুসল্লিদের জন্য নামাজ আদায়ের পরিধি আরও বাড়ানো হবে। এজন্য স্টেশন ক্লাবটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নামাজের স্থান আরও বেড়েছে। দূর-দূরান্তের মুসল্লিদেও যাতায়াত সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়ও এই ইদগাহ মাঠের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এজন্য দেশের বাইরে থেকে ডিজাইনার ও প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হয়েছে। এই ঈদগাহ আগামীতে বিশ্বের মানুষ চিনবে বলে আমরা মনে করছি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা