গাজীপুরে গ্যাস বিস্ফোরণ
কুষ্টিয়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:২৯ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৩৩ পিএম
ইয়াসিন আরাফাত। প্রবা ফটো
প্রায় ৭ বছর ধরে পঙ্গু স্বামীর ভার বইছেন আয়েশা খাতুন। সম্প্রতি গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ছেলে ইয়াসিন আরাফাত প্রাণ হারান। এবার পুত্রবধূ (ইয়াসিন আরাফাতের স্ত্রী) ও নাতির দায়িত্বও নিতে হচ্ছে পোশাককর্মী আয়েশাকে। আসন্ন ঈদে আনন্দের ছিটেফোঁটাও নেই পরিবারটিতে।
ইয়াসিন আরাফাতের জন্ম কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার গোপগ্রামে মামার বাড়িতে। গোপগ্রামের বাড়িতে কথা হয় তার মামা সাইফুদ্দিন বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, বোন আয়েশা খাতুন গাজীপুরে পোশাককর্মী হিসেবে কাজ করেন। সেখানে পরিচয়ের সূত্রে রাজমিস্ত্রি আল আমীনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আল আমীনের গ্রামের বাড়ির সঠিক ঠিকানা জানা নেই। এই বাড়িতেই ইয়াসিন ও তার বড় ভাই আব্দুল কাদেরের জন্ম হয়। এ কারণে এই বাড়িই নিজের বাড়ি করে নেন ইয়াসিন। ঈদসহ নানা ছুটি-ছাটায় এখানেই বেড়াতে আসতেন। মাত্র ৪০ দিন আগে ইয়াসিনের স্ত্রী রুমি খাতুন পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
সাইফুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ইয়াসিন বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করত। তার বাবা আল আমীন রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। ৭ বছর আগে কাজ করার সময় ভবনের ওপর থেকে পড়ে গুরুতর জখম হন। সেই থেকে তিনি পঙ্গু। তাই সংসারের ভার বইছেন আমার বোন আয়েশা খাতুন। ইয়াসিন বড় হওয়ার পর বাসে হেলপারের কাজ শুরু করায় তাদের সংসারের অভাব দূর হয়েছিল। আয়েশার কষ্ট সামান্য হলেও কমেছিল। পরিবারের সুদিন ফেরার অপেক্ষায় ছিল তারা। কিন্তু হঠাৎ করে বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো পরিবারটির ওপর দুর্দিন নেমে আসে।
গত ১৩ মার্চ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হন ইয়াসিন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ মার্চ মারা যান তিনি। তার অকালমৃত্যুতে অভাব আরও জেঁকে বসেছে পরিবারটির ওপর। ঈদ উপলক্ষে কোনো আনন্দ নেই পরিবারটির সদস্যদের মধ্যে।
ইয়াসিনের মামাতো ভাই সাগর হোসেন বলেন, ‘সরকার যদি পরিবারটির প্রতি সাহায্যের হাত না বাড়ায় তাহলে দুরবস্থার শেষ থাকবে না। তারা ঠিকমতো ঈদ উদযাপনও করতে পারবে না।’