লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা
প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:১৩ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৩৯ পিএম
পোশাক তৈরির কাজে ব্যস্ত কারিগররা। লালমোহন পৌরশহরের একটি কারখানায়। প্রবা ফটো
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা বেড়েছে ভোলার লালমোহনের দর্জিপাড়ায়। কেউ সেলাই করছেন, কেউ বোতাম লাগিয়ে দিচ্ছেন, কেউ কাপড় কাটায় ব্যস্ত, আবার কেউবা ইস্তিরি করে অর্ডার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি জামা-কাপড় সাজিয়ে রাখছেন। কারও যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত চলে কাজ। দর্জিপাড়ায় চলেছে সুই-সুতার বিরামহীন যুদ্ধ। লালমোহন পৌর শহরসহ উপজেলার সব হাট-বাজারের দর্জিপাড়ায় চলছে এ যুদ্ধ। চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে নতুন কাপড় কিনে পোশাক তৈরির জন্য দর্জির দোকানগুলোতে ভিড় করছেন মানুষজন। পোশাক তৈরি করতে বিরামহীনভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন দর্জিরা। দর্জিদের এখন লক্ষ্য কেবল ফরমায়েশ অনুযায়ী পোশাক তৈরি করে হস্তান্তর করা। তাই ক্লান্তি উপেক্ষা করে নিজেদের কাজে মনোযোগী। পুরুষের চেয়ে নারীদের পোশাক তৈরির ফরমায়েশ বেশি বলে জানান দার্জিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি পিস প্যান্ট ৪৫০-৫০০ টাকায় সেলাই করা হয়, শার্ট ৩৫০-৪০০, পাঞ্জাবি ৪০০-৫০০, পায়জামা ২৫০-৩০০, লেহেঙ্গা ৭০০-৮০০, থ্রিপিস প্রকারভেদে ২৫০-৫০০ টাকা। আর প্রকারভেদে সালোয়ার-কামিজের মজুরি নেওয়া হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্লাউজ ও পেটিকোট ১৫০-২০০, বাচ্চাদের পোশাক সেট অনুযায়ী ৫০০-৬০০ টাকা মজুরিতে সেলাই করা হয়।
কর্মব্যস্ততা নিয়ে কথা হয় পৌর শহরের নাফিসা টেইলার্সের কয়েকজন কারিগরের সঙ্গে। মো. রাসেল নামে একজন জানান, প্রায় ৯ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত। গত বছরের ঈদের চেয়ে এ বছরের কাজের চাপ অনেক। সকাল থেকে ভোররাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। এতে দৈনিক ৭০০-৮০০ টাকার মতো আয় হয়। এই আয় দিয়েই চলে তার সংসার। তবে বছরের অন্যান্য সময় কাজ কিছুটা কম থাকে। তখন দৈনিক ৫০০ টাকার মতো আয় হয়।
কারখানার আরেক কারিগর মো. হানিফ বলেন, ‘২২ বছর ধরে এই পেশায় আছি। ঈদ এলে আমাদের কাজ বাড়ে। এই ঈদেও ব্যাপক কাজ হাতে রয়েছে। এতে করে দৈনিক ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার মতো আয় হয়। এই আয়ের টাকায় স্বামী-স্ত্রীসহ তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ এই কাজ করে সবাইকে নিয়ে ভালো আছি।’
ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার বিষয়ে লালমোহন থানার ওসি (তদন্ত) মো. এনায়েত হোসেন বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য থানা পুলিশের কয়েকটি টিম নিয়মিত কাজ করছে। বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছি। এরপরও যদি কোথায়ও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তাহলে তাৎক্ষণিক জানানোর জন্য অনুরোধ থাকবে।