কেএনএফ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ২২:১৪ পিএম
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২৪ ০০:১০ এএম
ছবি: সংগৃহীত
বান্দরবানে পৃথক তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশ ও আনসারের অস্ত্র লুট, থানায় হামলা ও ব্যাংক ম্যানেজার অপহরণের ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন এসব এলাকার মানুষ। কোথাও বিকট শব্দ হলে আতঙ্ক বেড়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হতে-না-হতেই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে রুমা-থানচি বাজারের দোকানপাট।
গত ২ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে রুমা উপজেলা পরিষদ এলাকায় অবস্থিত সোনালী ব্যাংকের গ্রিল ভেঙে ডাকাতি করে কেএনএফ। তারা পুলিশের ১৪টি অস্ত্র-গুলি লুট ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর ১৬ ঘণ্টা পর থানচি উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা করে টাকা লুট করে তারা। রুমায় ডাকাতির একপর্যায়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বেধড়ক মারধরে পুলিশের দুই সদস্য গুরুত্বর আহত হন। তারা বর্তমানে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় রুমা ও থানচি উপজেলায় কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিয়ে দিন যাচ্ছে। ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় দুই শতাধিক অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে রুমা থানায় চারটি ও থানচি থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে কেএনএফের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির আহব্বায়ক ক্য শৈ হ্লা।
থানচি বাজার কমিটির সভাপতি ও থানচি কুটির রিসোর্টের মালিক খামলাই ম্রো বলেন, ঘটনার পর থেকে পর্যটক নাই। রমজান মাসে এমনিতেই পর্যটক কম আসে। তার ওপর দিনদুপুরে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় মানুষের মনে চরম আতংক ও ভয় দেখা লেগেছে। সবাই দোকানপাট বন্ধ রেখেছিল। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে দোকানপাট খুলেছে, কিন্তু আতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কাটেনি।
থানচি বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনার পর লোকজনের আনাগোনা কমে গেছে। আগে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা থাকত। এখন সন্ধ্যা হলেই দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। মানুষের মনে আতঙ্ক রয়েছে।
রুমা বাজারের ব্যবসায়ী আবু সিদ্দিক বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে খুবই আতঙ্কে ছিলাম। শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পর মোটামুটি স্বাভাবিক হয়েছে পরিস্থিতি। তবে সবাই এখন সন্ধ্যায় বাজারের সকল দোকান বন্ধ করে ফেলছে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের শক্ত অবস্থানের কথা জানিয়েছেন সিনিয়র মন্ত্রীরা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি সহযোগিতা নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কেএনএফ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন। আর জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গোয়েন্দা বিভাগে বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। তাছাড়া তিনি সীমান্তজুড়ে সেনা মোতায়েন ‘এখন সময়ের দাবি’ বলে মন্ত্রব্য করেছেন। তাদের এসব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, পাহাড়ে যৌথ অভিযান চলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।