লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৩ পিএম
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে কান্না করেন গ্রাম পুলিশের চাকরি প্রত্যাশী হাফিজ উল্যাহ। প্রবা ফটো
গ্রাম পুলিশের চাকরি পাইয়ে দিতে এক যুবকের কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার দুপুরে নিয়োগ পরীক্ষা দিতে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে যান ওই যুবক। কিন্তু জানতে পারেন তাকে পরীক্ষার জন্য ডাকা হয়নি। এসময় ইউএনও কার্যালয়ে হামাগুড়ি দিয়ে কান্না করেন তিনি।
অভিযুক্ত সালাহ উদ্দিন মানিক লক্ষ্মীপুর সদরের কুশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। ভুক্তভোগী যুবক হাফিজ উল্যাহ কুশাখালী ইউনিয়নের নলডগি গ্রামরে রিকশাচালক সেকান্তর মিয়ার ছেলে ও পেশায় রিকশা চালক। তিনি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশের চাকরি প্রত্যাশী ছিলেন।
হাফিজ জানায়, গ্রাম পুলিশে নিয়োগ দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন মানিককে দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। নিয়োগের বিষয়ে জানতে পেরে তিনি উপজেলা কার্যালয়ে যান। তবে পরীক্ষার জন্য তাকে ডাকা হয়নি। বিষয়টি তিনি চেয়ারম্যান মানিকের কাছে জানতে চান। তখন চেয়ারম্যান তাকে জানায় আগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এসময় টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বললে কোনও উত্তর দেয়নি চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী তাকে নেওয়া হবে কি না তা জানতে চাইলেও উত্তর দেয়নি চেয়ারম্যান।
হাফিজ উল্লাহ বলেন, ‘গরু ও রিকশা বিক্রিসহ ঋণ নিয়ে গ্রাম পুলিশের চাকরির জন্য চেয়ারম্যানকে দেড় লাখ টাকা দিয়েছি। চাকরিতো পেলামই না, এখন টাকাগুলো ফেরত দেবে না। আমি কিভাবে এখন সংসার চালাব। মানুষের ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেড় লাখ টাকাসহ চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র চেয়ারম্যান আমার কাছ থেকে নিয়েছেন। কিন্তু তিনি আমার চাকরির আবেদনই করেননি। অপর প্রার্থীর থেকে আরও বেশি টাকা নিয়ে তার আবেদন উপজেলায় জমা দিয়েছেন। প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি ইউএনওকে জানানো হয়েছে। তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন।’
এ ব্যাপারে কুশাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন মানিকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, ‘টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কেউ যদি কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গতকাল শনিবার সদর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (দফাদার ও মহল্লাদার) নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৬ জনের বিপরীতে ৪৩ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।