হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:০৩ পিএম
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:০৯ পিএম
চট্টগ্রামের ফুটপাথে বেড়েছে ক্রেতার ভিড়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। নগরীর রিয়াজউদ্দীন বাজার থেকে তোলা। প্রবা ফটো
আর মাত্র পাঁচ দিন পরই ঈদ। তাই ঈদ সামনে রেখে চট্টগ্রামে জমে উঠেছে ঈদবাজার। অভিজাত শপিং মল থেকে ফুটপাথ সবখানেই বেড়েছে ক্রেতার আনাগোনা। প্রিয়জনের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে রমজানের শেষ দিকে এসে মার্কেট শপিং মলে ভিড় করছে নগরবাসী। তবে অভিজাত শপিং মলের তুলনায় ফুটপাথ, রিয়াজউদ্দিন বাজার, হকার্স মার্কেটে বেড়েছে বিকিকিনি। তাই শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের পদচারণায় জমজমাট ফুটপাথ।
বিক্রেতাদের দাবি, রিয়াজউদ্দিন বাজার, হকার্স মার্কেট, ফুটপাথে তুলনামূলক কম দামে পছন্দের পোশাক পাওয়া যায়। তাই ঈদের কেনাকাটায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তের পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে এসব মার্কেট। তবে অভিজাত শপিং মলে বেচাকেনা সেইভাবে বাড়েনি। ঈদ সামনে রেখে শেষ সপ্তাহে যেই পরিমাণ বেচাকেনা হওয়ার কথা সেটি এখনও হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর সানমার ওসানসিটি, ইউনেস্কো সেন্টার, আমিন সেন্টার ঘুরে দেখা গেছে, ওইসব মার্কেটের অধিকাংশ দোকানেই তেমন একটা ভিড় নেই। বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন। দুয়েকজন ক্রেতা মাঝেমধ্যে দোকানে আসছেন। পুরো দোকান ঘুরে পছন্দ হলে কিনছেন, না-হয় ঘুরেফিরে বেরিয়ে যাচ্ছেন।
দুপুর ২টায় দিকে সানমার ওশান সিটির ক্যাটস আই শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ৮-৯ জন ক্রেতা পোশাক দেখছেন। অথচ ওই শোরুমে ১০-১২ বিক্রয় প্রতিনিধি অলস দাঁড়িয়ে রয়েছেন। একই অবস্থা দেখা যায় ম্যাপল ও শৈল্পিকের শোরুমে। ওই দুই প্রতিষ্ঠানেও ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা নেই। বিক্রয়কর্মীরা অলস দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তবে সন্ধ্যার পর বেচাকেনা কিছুটা বাড়ে বলে জানিয়েছেন বিক্রয়কর্মীরা।
ক্যাটস আই শোরুমের বিক্রয় প্রতিনিধি পাভেল জানান, এবার শেষ মুহূর্তে এসেও পোশাক বেচাকেনা খুব একটা বাড়েনি। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় এখন বেচাকেনা সামান্য বেড়েছে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে ইফতারের পর থেকে বেচাকেনা বাড়ে।
এদিকে অভিজাত শপিং মলে বেচাকেনা কিছু কম থাকলেও পুরোপুরি জমে উঠেছে নগরীর জহুর হকার্স মার্কেট, রিয়াজউদ্দিন বাজার, নগরীর আগ্রাবাদ, জিইসি, নিউ মার্কেট এলাকার ফুটপাথ। নিম্নবিত্তের মার্কেটখ্যাত হকার্স মার্কেটে শুধু নিম্নবিত্ত নয়, মধ্যবিত্তের অনেক ক্রেতাও ভিড় করছেন সেখানে। একই অবস্থা আগ্রাবাদ, জিইজি মোড় এলাকায়। সেখানে ফুটপাথে ভ্যানগাড়ি নিয়ে বসা পোশাক, জুতা, বেল্টসহ পোশাকের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঈদ ঘিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন এসব এলাকার বিক্রেতারা। শেষ সময়ে সাধ্যের মধ্যে পোশাক কিনতে বিপণিবিতানগুলোর পাশাপাশি রিয়াজউদ্দিন বাজার, হকার্স মার্কেট আর ফুটপাথের এসব দোকানে ভিড় জমাচ্ছে নগরবাসী। তাতে ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা।
হকার্স মার্কেটের করিম ব্রাদার্সের মালিক আব্দুল করিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এখানে ব্র্যান্ডের পোশাকের কাছাকাছি মানের পোশাক তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় বিধায় নগরীর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ এখান থেকে ঈদের কেনাকাটা করেন। রমজানের শুরু দিকে বেচাকেনা খুব একটা ছিল না। তবে এখন ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বেচাকেনা বাড়ছে। মূলত ২০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনা বেড়েছে। আজ (গতকাল) রমজানের শেষ শুক্রবার হওয়ায় আশা করছি ভালো বেচাকেনা হবে। কারণ চাকরিজীবীদের অনেকে গত সপ্তাহে বেতন-বোনাস পেয়েছেন।
নগরীর আগ্রাবাদ এলাকা থেকে পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী এমদাদ হোসেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বাজারে এখন সবকিছুর দাম বেশি। কিন্তু সেই হিসেবে আমাদের বেতন তো বাড়েনি। তাই কম টাকায় যাতে পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করতে পারি হকার্স মার্কেটে এসেছি। কিন্তু এখানে এসেও দেখছি গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম বেশি।’