মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১০:২৯ এএম
আপডেট : ০৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫০ পিএম
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন। ছবি : সংগৃহীত
মূল ভূখণ্ড থেকে দূরে সমুদ্রের বুকে অবস্থান দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপের। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে পিছিয়ে থাকলেও এ জনপদের আছে নানা সম্ভাবনা। সার্বিক বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন
প্র. বা : সন্দ্বীপে কতটা উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে বলে মনে করেন?
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন : উন্নয়ন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান খাল কাটা কর্মসূচির মাধ্যমে সন্দ্বীপে উন্নয়ন শুরু করেছিলেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময় সন্দ্বীপে গুপ্তছড়া-কুমিরা রুটে প্রথমবারের মতো পাকা জেটি নির্মিত হয়। নতুন জাহাজ এমভি বারো আউলিয়া চালু হয়। দেলোয়ার খাঁ সড়কসহ বিভিন্ন গ্রামীণ সড়ক পাকাকরণ শুরু হয়। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমানেও কাজ চলছে। সন্দ্বীপে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযোগ একটি বড় ঘটনা, যা দ্বীপ জনপদে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে।
প্র. বা : সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের বড় সমস্যা বা সংকট কী?
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন : মোটাদাগে সন্দ্বীপের মানুষদের বড় সংকট মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যাতায়াত। আধুনিক যুগে এমন যোগাযোগব্যবস্থা রীতিমতো লজ্জার বিষয়। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে নির্মমভাবে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি এবং অর্থের অপচয়- দুটোই হচ্ছে যাতায়াতের ক্ষেত্রে। এ ছাড়া সন্দ্বীপকে গ্রাস করছে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক সমস্যা। এখানে নদী ভাঙনের শিকার হাজারো মানুষের জীবনমান দারিদ্র্যসীমার নিচে। এ ছাড়া শাসক দলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে এলাকা ছাড়া করার মানসিকতাও একটি বড় সংকট বলে মনে করি।
প্র. বা : একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এসব সমস্যার সমাধান কী হতে পারে বলে মনে করেন?
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন : অতি মুনাফালোভী মানসিকতা পরিহার করলে যাতায়াত সমস্যার সমাধান হতে পারে। এ ছাড়া ঘাটে একাধিক কর্তৃপক্ষ সক্রিয়। এসব কর্তৃপক্ষকে জনস্বার্থ বিবেচনায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। যেমন সরকার নির্ধারিত ভাড়া-টোল আদায় করা, পর্যাপ্ত নৌযান রাখা। দ্বীপের প্রতিবেশ রক্ষায় সরকারের বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। নতুন জেগে ওঠা চরে নদী সিকস্তি মানুষদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া জাতিসংঘসহ বৈশ্বিক সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী জলবায়ু উদ্বাস্তুদের স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা চালাতে হবে।
প্র. বা : নতুন চরে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হচ্ছে। দ্বীপে বিনিয়োগের বিষয়ে আপনারা প্রবাসীরা কী ভাবছেন।
মিজানুর রহমান ভূঁইয়া মিল্টন : সন্দ্বীপ একসময় কৃষিপ্রধান দ্বীপ ছিল। সঙ্গে ছিল জাহাজ ও লবণ শিল্প। কিন্তু পরে নদী ভাঙনে প্রায় সবকিছুই বিলুপ্ত হয়ে যায়। জাহাজ ও লবণ শিল্পের সঙ্গে কমে যায় কৃষি উৎপাদনও। বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে না ওঠায় তরুণ, শ্রমিক এমনকি শিক্ষিত যুবকরা জীবিকার সন্ধানে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়েন। এদের বেশিরভাগই সন্দ্বীপে স্থায়ীভাবে ফিরতে চান না। কিন্তু বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি হলে এসব মানুষের কাছে থাকা অর্থ সন্দ্বীপে বিনিয়োগের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।