আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২৫ পিএম
আখাউড়া স্থলবন্দরে কাস্টমস ব্যাগেজ স্ক্যানিং কক্ষ। প্রবা ফটো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে ভারতীয় এক নারী যাত্রীকে জোরপূর্বক মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে এক সিপাহীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে সিপাহী মোঃ রুবেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে আখাউড়া শুল্ক স্টেশন থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক বদলি) করে তাকে কুমিল্লা কাস্টমস কমিশনার কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে বুধবার (৩ এপ্রিল) আখাউড়া স্থলবন্দরে জোরপূর্বক মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করার ঘটনা ঘটে।
আখাউড়া স্থল-শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার স্ট্যান্ড রিলিজের বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিদেশি পাসপোর্টধারী যাত্রীরা সঙ্গে একটি করে মদের বোতল নিতে পারবেন বলে নিয়ম রয়েছে। বুধবার দুপুরে ভারতীয় একজন পুরুষ ও দুইজন নারী আসে। তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে দুটি মদের বোতল পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। তাৎক্ষনিক আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।’
ঘটনার সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার জোগেন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত সাহা, তার বোন ঐশি সাহা ও তাদের এক আত্মীয় বেলা দেড়টার দিকে বৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন। স্থলবন্দরের কাস্টমস ব্যাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে মদের বোতল পাওয়া যায়। এটি নিতে হলে তাদেরকে এক হাজার টাকা দিতে হবে জানানো হয়। তবে প্রত্যেক বিদেশি যাত্রী একটি করে মদের বোতল আনতে পারবে-এমন নিয়মের কথা বলার পর স্থলবন্দরের কাস্টমস ব্যাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে থাকা সিপাহী মোঃ রুবেল ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। রুবেল তাদেরকে মাদক ব্যবসায়ী বলেন। ব্যবসায়ী না হলে তাদের মদ খেতে বলেন সিপাহী রুবেল। খবর পেয়ে সেখানে ভারতীয়দের পরিচিতরা ছুটে যান। কাস্টমসের এক কর্মকর্তা তার সহকর্মীকে যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ান।
সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘বাংলাদেশ কাস্টমসে আসার পর আমাদের কাছে অ্যালকোহল আছে কি না জিজ্ঞাসা করা হয়। বলেছি আমাদের কাছে তিনটি পাসপোর্ট ও দুটি অ্যালকোহলের বোতল আছে। আমি নিয়ম মেনেই দুই বোতল মদ এনেছি। কিন্তু কাস্টমসের একজন বলছিলো এটা নিতে হলে এক হাজার টাকা দিতে হবে। এতে রাজি না হওয়ায় আমার বোনকে জোর করে খাইয়ে দিতে চায়। আমাকেও খেতে বলে। একটা করে বোতল এনে কি কেউ ব্যবসা করে। তিনি আমাদের হ্যারাজ করেছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারের কাছে এর উচিত বিচার চাই।’
ঐশি সাহা বলেন, ‘স্থলবন্দরের কাস্টমস ব্যাগেজ স্ক্যানিং কক্ষে যাওয়ার পর তল্লাশি করে মদের বোতল পান। কাগজ দেখিয়েছি। তখন বোতল ভেঙে আমাকে মদ খেয়ে দেখাতে বলেন। আমি বলেছি আমার বয়স ১৮ পার হয়েছে। আর বড়দের সামনে ও আমার ভাইয়ের সামনে তো মদ খেতে পারি না। মদ খেতে হলে বাসায় খাব। আপনাদের সামনে কেন খেতে হবে। এরপর তারা নতুন কাপড় কি কি আছে জানতে চায়। আমি বলেছি বেড়াতে এলে নতুন কাপড় আনা যাবে না এমন কোনো নিয়ম আছে নাকি।’
এ বিষয়ে জানতে কাস্টমসের সিপাহী মোঃ রুবেলের মোবাইলে ফোন দিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেয়। পরে একাধিক বার ফোন দিয়েও কোন সারা পাওয়া যায়নি।