বাগেরহাট প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:৫২ পিএম
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৩৭ পিএম
হামলায় আহত রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মীদের পাঁচজনের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া তিনজন। ছবি কোলাজ : প্রবা
বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে ৫০-৬০ জনের একটি ডাকাত দলের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় অস্ত্রধারী ডাকাতদের হামলায় দুই আনসার সদস্যসহ পাঁচ নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের উত্তর-পশ্চিম কোনের (মেটেরিয়াল ইয়ার্ড) ৩ নম্বর টাওয়ার (ডিউটি পোস্ট) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন এসএসএসএলের নিরাপত্তা সুপারভাইজার আকরাম, সাইদুল ইসলাম, মিন্টু বৈরাগী, ব্রজেন মন্ডল ও আনসার ব্যাটালিয়নের হাবিলদার কামাল পাশা। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। পরে রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হওয়ায় ব্রজেন মন্ডল ও আনসার সদস্য কামাল পাশাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আহতরা জানায়, সেন্ট্রি সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড (এসএসএসএল) নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা ঘটনার সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওই এলাকাতে দায়িত্বে ছিলেন। রড, স্কার্ভসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে কয়েক জনকে দেখে আটকাতে গেলে নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর দল বেঁধে হামলা করে তারা। এ সময় তাদের আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে কাছে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা।
রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা রুহুল আমিন সজিব বলেন, আহতদের প্রত্যেকের শরীরের এলোপাতারি মারধরে জখম রয়েছে। রাত ১টার দিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে দুজনের মাথা গভীর ক্ষত থাকাতে খুলনায় রেফার্ড করা হয়েছে। অন্যদের এখানে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপ-মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল আজিম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, রাতে প্লান্টের ৫ ইয়ার্ডে একদল ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে মালামাল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। এ সময় বাধা দিলে নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর হামলা হয়। এতে পাঁচজন আহত হয়েছেন।
নিরাপত্তা সুপারভাইজার আকরাম হোসেন বলেন, কেন্দ্রের উত্তর-পশ্চিম কোনের ৩ নম্বর টাওয়ার (ডিউটি পোস্ট) এলাকায় কয়েকজনকে কিছু স্কার্ভ ও রড নিয়ে পালাতে দেখে বাধা দিতে যায় তারা। এ সময় দুই দিক দিয়ে ৫০-৬০ জন সঙ্গবদ্ধ হয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এলোপাথাড়ি মারধর করে তাদের আটকে রেখে পাশের মেটেরিয়াল ইয়ার্ড থেকে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল। তখন আনসার সদস্যরা এলে তাদের ওপরও হামলা করে। এ সময় একজন আনসার সদস্যকে রড ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর জখম করে। পরে আরও আনসার ও পুলিশ সদস্যরা এসে গুলি ছুড়লে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ৩ নম্বর টাওয়ার এলাকার পাশের তাঁরকাটার বেড়া। হামলাকারীরা ওই বেড়া কেঁটে মালামালি নিতে রাতে ঝোঁপ ঝাড়ের জঙ্গল পেরিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। তারা লোহার রড, বিভিন্ন স্কার্ভসহ বেশকিছু মালামালও নিয়ে গেছে।
আনসার ব্যাটেলিয়ানের পরিচালক মোল্লা আবু সাইদ বলেন, বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের ওপর হামলার খবর পেয়ে আনসার সদস্যরা এগিয়ে যায়। এ সময় তাদের উপর হামলা হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ৩০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়। আমাদের একজন সদস্য আহত হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের একাধিক টিক কাজ করেছে।