× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কিশোরগঞ্জ

খরা আর পানি সংকট ১৫ গ্রামজুড়ে

সাইফুল হক মোল্লা দুলু, মধ্যাঞ্চল

প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:৩৬ এএম

আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:১৮ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

মাঘ, ফাল্গুন ও চৈত্র মাসে এমনিতেই পানির স্তর নিচে নেমে যায়। তার ওপর এবার যুক্ত হয়েছে খরা। এমন প্রতিকুল প্রতিবেশে অকেজো হয়ে পড়েছে ৩০০-র বেশি নলকূপ। পানীয় জলের সংকটে কষ্ট পাচ্ছে ২৫ হাজার মানুষ। এই চিত্র কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মহিনন্দ ও মাইজকাপন ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের।

সরেজমিনে কিশোরগঞ্জের মহিন্দ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, নয়াপাড়া, গোয়ালাপাড়া, চরপাড়া, কলাপাড়া, বাক্সখিলা, ভদ্রপাড়া, নাগপাড়া, কাশুরারচর, আগপাড়া, দরিয়াবাদ, চংশোলাকিয়াসহ মাইজকাপন ইউনিয়নের কালাইহাটি, পাচধা, মহিষার কান্দি, বেপারিপাড়া, মজুমদার পাড়া, হাজিরগলসহ ১৫টি  গ্রামের সাধারণ নলকূপগুলোতে ঠিকমতো পানিই মিলছে না। টিউবওয়েলগুলো পড়ে আছে অকেজো অবস্থায়। এসব নলকূপ থেকে সচরাচর ৩০০-৪০০ ফুট গভীর মাটির নিচ থেকে পানি তোলা যায়। হাতে গোণা কিছু নলকূপে পানি উঠলেও তা আবার আর্সেনিকযুক্ত কিংবা অস্বচ্ছ হওয়ায় ব্যবহার করাই যাচ্ছে না। 

এ পরিস্থিতিতে অব্যবহৃত অকেজো নলকূপ চুরি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক গৃহস্থ। তারা পাইপ থেকে নলকূপ খুলে ঘরে নিয়ে রেখে দিয়েছেন।

পক্ষকালের মধ্যে ৯০ শতাংশ নলকূপেই পানি মিলবে না

গ্রামের গৃহিনী ও কিশোরীরা এখন কলসি কাঁধে প্রয়োজনে দূরের টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। মসজিদের টিউবওয়েলে পানি না ওঠার কারণে মুসল্লিরা অজু করতে ব্যবহার করছেন আশপাশের ডোবা-পুকুরের পানি। 

বিভিন্ন গ্রামের বেশ কয়েকজন জানালেন, ধোয়া-মোছা কিংবা রান্নাবান্নার কাজে এখন বাধ্য হয়েই তারা পুকুর কিংবা ডোবার পানি কাজে লাগাচ্ছেন। এতে হেপাটাইটিস-বি, ডায়রিয়া, আমাশয়সহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাদের ধারণা, এ অবস্থা চলতে থাকলে পক্ষকাল পরে হয়তো ৯০ শতাংশ নলকূপেই পানি উঠবে না। এ অবস্থায় প্রশাসন যদি পদক্ষেপ না নেয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

ক্রমশই পানির স্তর নিচে নামছে 

নয়াপাড়া গ্রামের রহমান শাহ্সহ একাধিক ব্যক্তি বলছিলেন, নয়াপাড়া গ্রামে লোকসংখ্যা দেড় হাজারের মতো।  তার মধ্যে নসহস্রাধিক মানুষের বাড়িতে নলকূপ নেই। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় অধিকাংশ নলকূপ অকেজো হয়ে পড়েছে। তারা এখন পানি সংগ্রহ করছেন পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে। নয়াপাড়ার সাড়ে তিন ফুট গভীর টিউবওয়েলটিতে চার বছর আগেও সবসময় পানি উঠত। কিন্তু প্রতি বছর কমতে কমতে এখন আর পানিই উঠছে না। বেশ কয়েক বাড়ি পর কোনও প্রতিবেশির টিউবওয়েলে পানি পাওয়া গেলেও, সংগ্রহ করার জন্যে লাইন ধরতে হয়।

গোয়ালাপাড়া গ্রামের রহমান মিয়া জানান, গত পাঁচ বছর ধরে পানির স্থর নিচে নামছে। এ অবস্থায় পূর্বের চেয়ে গভীর নলকূপ না হলে পরিস্থিতি সামাল দেয়া যাবে না।

আবেদন করেও মিলছে না টিউবওয়েল

নয়াপাড়ার রহমান শাহ জানালেন, চেয়ারম্যানের মাধ্যমে গণস্বাস্থ্য প্রকৌশলে একহাজার ফুট টিউবওয়েলের জন্য আবেদন করে দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু ফাইল জটিলতার কারণে পাওয়া যাচ্ছে না।

মহিনন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মো. লিয়াকত আলী  জানান, কয়েক বছর ধরে এই সমস্যা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে খাবারের উপযুক্ত পানির চরম সংকট চলছে। টিউবওয়েলের জন্য অনেকেই আবেদনপত্র ইউপি কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। কিন্তু বরাদ্দ না দিলে তাদের করার কিছুই নেই। একই কথা বলেন মাইজখাপন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ তারু। তিনি জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। 

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবেদুর রহমান জিমি বলেন,  ‘হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন ধোয়ার পানি বিশুদ্ধ না হলে হেপাটাইটিস-বি (জন্ডিস), ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন ছোঁয়াচে অসুখ ছড়াতে পারে। তবে পুকুরের পানি সেদ্ধ করে ব্যবহার করা যায়। ঠান্ডা করে পানও করা যায়।’ 

কিশোরগঞ্জ জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ সময় জেলার অধিকাংশ এলাকায়ই সচরাচর পানির স্তর নীচে নেমে যায়। বৃষ্টি না হওয়ায় এবং প্রচন্ড খরার কারণে এবার অবস্থা আগের চেয়ে অনেক প্রকট। বৃষ্টি হলে অবস্থার উন্নতি হবে। এলাকায় পানি সমস্যার সমাধনের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা