× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কানা রাজার সুড়ঙ্গ

রামু (কক্সবাজার) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১০:৫১ এএম

আপডেট : ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১১:০৭ এএম

রামু উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উথিয়ারঘোনায় সুউচ্চ পাহাড়ের নিচে কানা রাজার সুড়ঙ্গ। প্রবা ফটো

রামু উপজেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উথিয়ারঘোনায় সুউচ্চ পাহাড়ের নিচে কানা রাজার সুড়ঙ্গ। প্রবা ফটো

মিয়ানমার থেকে একসময় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষজন মাঝেমধ্যে পূজা-অর্চনা করতে আসতেন এখানে। সুড়ঙ্গের পাশের পাহাড়ে ছিল একটি মন্দির, সেখানে এক বৌদ্ধ ভিক্ষু থাকতেন কথাগুলো বলছিলেন কাউয়ারখোপের উখিয়ারঘোনার প্রবীণ বাসিন্দা শহীদ উল্লাহ।

যে স্থানটি নিয়ে কথা হচ্ছিল, সেটি পরিচিত কানা রাজার সুড়ঙ্গ নামে। রামু উপজেলা থেকে ৫ কিলোমিটার পূর্বে কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনায় সুউচ্চ পাহাড়ের নিচে এ সুড়ঙ্গের অবস্থান।

স্থানীয় তরুণ রহমত উল্লাহ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কানা রাজার সুড়ঙ্গের বিষয়ে জানি। আগে ভয়ে ওখানে কেউ যেত না। সবাই ওই গুহাকে আঁধার মানিক নামে চেনে। রামু থেকে একদল লোক নিয়মিত আসা-যাওয়ার ফলে এখন স্থানীয়রাও যাওয়া-আসা করছে। সবার কাছে এখনও রহস্য কানা রাজার সুড়ঙ্গ বা আঁধার মানিক। সবার প্রশ্নÑ ভেতরে কী থাকতে পারে?

ইতিহাসের ভাষ্যমতে, একদা টেকনাফ-উখিয়া এলাকাটি রাখাইন শাসনাধীন ছিল। এক রাখাইন রাজা (এক চোখ অন্ধ) নিজের আত্মরক্ষার্থে এখানে একটি গুহা নির্মাণ করেছিলেন বলে কথিত। গুহার মধ্যে ধনরত্ন আছে বলে স্থানীয়রা একে আঁধার মানিক নামেও ডাকে। ১৯৬০ সালে প্রথম রাশিয়ান তেল-গ্যাস অনুসন্ধানী একটি দল গুহাটি আবিষ্কার করে। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রেলিয়ার এক বিশেষজ্ঞ দল এ অঞ্চলে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালিয়েছিল। তবে কোনো তেল-গ্যাস পাওয়া যায়নি।

রামুর অনেকেই গুহায় প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। কক্সবাজার আর্ট ক্লাবের সভাপতি তানভির সরোয়ার যাদের অন্যতম। তিনি বলেন, আঁধার মানিকের প্রবেশমুখ ত্রিভুজাকৃতির মাটি থেকে ২৫ ফুট উঁচু। আনুমানিক ৭০ ফুট গভীর পর্যন্ত অনেক কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে গুহাটিতে প্রবেশ করেছিলাম। ঘরের মতো বড় খালি জায়গা আছে ভেতরে। সেখান থেকে আরও পথ বের হয়েছে। ভেতরে একটি বাড়ির মতো বিশালাকৃতির জায়গা আছে। 

তানভির সারোয়ার জানান, সরকারি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগে আঁধার মানিক তালিকাভুক্ত হয়েছে। শিগগির গুহাটি খনন ও গবেষণার কাজ চালানো হবে। তাদের সঙ্গে এ কাজে যোগ দেবেন ডেনমার্কের একদল গবেষক। এ কাজে উন্নত প্রযুক্তির স্ক্যানার ব্যবহার করা হবে।

স্থানীয় ইতিহাসবিদ শিরুপন বড়ুয়া বলেন, বর্তমানে যে কানা রাজার গুহা বা আঁধার মানিকের সন্ধান পাওয়া গেছে, সে কানা রাজা হলো আরাকানের রাজা চিন পিয়ান, কিন্তু তার এক চোখ কানা ছিল এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ১৭৯৮ সালে চিন পিয়ান বর্মিরাজ কর্তৃক পরাজিত হয়ে কয়েক হাজার অনুসারীসহ নাফ নদ পার হয়ে চট্টগ্রামের কক্সবাজার অঞ্চলে পালিয়ে এসে এখানে বসবাস শুরু করেন। জি ই হারভের ‘হিস্ট্রি অব বার্মা’ বইয়ের সূত্র অনুসারে, আরাকানের দেশপ্রেমিক রাজা চিন পিয়ান ১৮১৫ সালে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় অসুস্থতায় মারা যান। বলা হয়, তিনি এই আঁধার মানিক বা গুহাতে আত্মগোপন করেছিলেন। 

সম্প্রতি কানা রাজার সুড়ঙ্গে সরেজমিন দেখা যায়, স্থানটি ঝোপঝাড়ে পরিপূর্ণ। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, পাহাড়টি বর্তমানে একজন দখল করে নিয়েছেন। সুড়ঙ্গটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি কার্যক্রমের কথা থাকলেও এটি এখনও শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন তারা।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা