ধামরাইয়ে বিস্ফোরণ
মনোয়ার হোসেন রুবেল, ধামরাই (ঢাকা) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:৫১ পিএম
আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৪ পিএম
গ্যাস বিস্ফোরণে নিহত একই পরিবারের তিনজন, নুরুল ইসলাম নান্নু মিয়া ও তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম, ছেলে আল হাদী সোহাগ। প্রবা ফটো
ঢাকার ধামরাইয়ে লিকেজ থেকে জমা গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ চারজনের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন অন্যজনের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানান চিকিৎসক।
ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দগ্ধদের মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়।
এর আগে, গত ২৭ মার্চ রাত সাড়ে তিনটার দিকে ধামরাই পৌরসভার মোকামটোলা এলাকায় ইব্রাহিম হোসেনের চারতলা ভবনের নিচতলার ফ্ল্যাটে জমা গ্যাসের বিস্ফোরণ থেকে লাগা আগুনে এক পরিবারের চারজন দগ্ধ হন।
মৃতরা হলেন- নুরুল ইসলাম নান্নু মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৫০) ও ছেলে এইচএসসি পরীক্ষার্থী আল হাদী সোহাগ (১৮)। এ ঘটনায় ১৬ শতাংশ দগ্ধ গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী নিশরাত জাহান সাথী (২২) এখনও চিকিৎসাধীন। তবে তার অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়।
তারা ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নের বাঘাইর গ্রামের বাসিন্দা।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, রবিবার দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুফিয়া বেগম মারা যান। সোমবার ভোর ৪ টার দিকে নুরুল ইসলাম ও বেলা ১১টার দিকে তাদের ছেলে আল হাদী সোহাগ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর মধ্যে সুফিয়া বেগম ৮০ শতাংশ, নুরুল ইসলাম ৪৮ শতাংশ ও সোহাগ ৪৩ শতাংশ দগ্ধ ছিলেন।
মৃতের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নুরুল ইসলাম সরকারের স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এক বছর আগে তিনি অবসরে যান। এরপর থেকে পরিবারসহ ধামরাই পৌর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। গত ২৭ মার্চ ভোর রাত সাড়ে তিনটার দিকে সেই ভাড়া বাসায় জমা গ্যাস থেকে বিস্ফোরণে তিন কক্ষের ফ্ল্যাটে আগুন লাগে। এতে পরিবারের চারজনই দগ্ধ হন। প্রথমে তাদের ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনজনের মৃত্যু হয়।
মৃত সুফিয়া বেগমের ভাই মজিবর রহমান বলেন, মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়ি নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তাদের গ্রামের বাড়িতেই দাফন করা হবে।
বাইশাকান্দা ইউনিয়ের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও নুরুল ইসলামের ভাতিজা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, গেল একদিনের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ বাড়ি আনা হবে। স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হবে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, দগ্ধ নুরুল ইসলাম, সুফিয়া বেগম ও সোহাগ হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অপরজনের অবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন।
এর আগে, ২৭ মার্চ ওই ঘটনার পর ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল রানা বলেছিলেন, সেহরির জন্য রান্না করতে গেলে তিন কক্ষবিশিষ্ট ফ্ল্যাটে জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ওই পরিবারের চারজন দগ্ধ হন।
তিনি বলেন, তিতাসের গ্যাসের আবাসিক সংযোগের পাশাপাশি গ্যাস সংকটের সময় তারা সিলিন্ডার গ্যাসও ব্যবহার করতেন। সিলিন্ডার না কি আবাসিক গ্যাস সংযোগের গ্যাস থেকে এ ঘটনা ঘটেছে সেটি তদন্ত করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়নি। আগুনে প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে যায়।