যশোর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪০ পিএম
আপডেট : ৩১ মার্চ ২০২৪ ১৮:০৪ পিএম
প্রতীকী ছবি
‘আমার কিছু মনে থাকে না। আর সেকারণেই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে অল্প একটু কাগজে তথ্য লিখে নেই। সেই লেখা পড়তে পড়তে যাই। পরীক্ষা শুরু হয়ে গেলে সেটা ফেলে দিতে মনে ছিল না। তারপর পরীক্ষার মধ্যে কলেজের সমাজবিজ্ঞান শিক্ষক তা দেখে ফেলেন। আমি তার কাছে ভুল স্বীকার করলাম। অনেকবার বললাম, খাতাটা দেন। তিনি আমার খাতা নিয়ে দেড় ঘণ্টা বসিয়ে রাখল, তবুও খাতাটা দিল না। তাসলিমা ম্যাডাম এবং ইসমাইল স্যার আমাকে তাড়িয়ে দিল। এত করে বললাম ওটা আমার ফেলে দিতে মনে নেই তাও তারা আমাকে পরীক্ষার সুযোগ দিল না। তাই আমি অবশেষে লজ্জায় মুখ দেখাতে না পেরে দুনিয়া থেকে বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাক সবাই। আমার ভুলত্রুটি থাকলে সবাই মাফ করে দিও। আমার কাছে ফারহানা ২৫ টাকা পাবে এবং সুবর্ণা ৫ টাকা পাবে, এটা তোমরা দিয়ে দিও।’ এই চিরকুট দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী শিক্ষার্থী সাবিহার। শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাবিহা যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ত।
তার ভাই রাকিব হোসেন বলেন, সকালে পরীক্ষায় অংশ নিতে কলেজে যায় সাবিহা। পরীক্ষা শুরুর পর তার কাছে থাকা কাগজের টুকরো দেখে ফেলেন কক্ষ পরিদর্শক। পরে প্রায় দেড় ঘণ্টা তার খাতা আটকে রাখা হয়। কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে নিজ ঘরে দরজা আটকে রাখে সাবিহা। পরে তার সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরে ঢুকে দেখা যায় সে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলছে। পাশে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ব্যাপারে গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল করিম বলেন, ‘সাবিহা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়টি দুঃখজনক। পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষার্থী সাবিহার কাছে নকল পাওয়া যায়। যে কারণে কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা তার কাছ থেকে খাতা নিয়ে নেয়।’
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। কেউ হত্যায় প্ররোচিত করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’