জামালপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৪ পিএম
আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৪ ২১:১১ পিএম
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দলিল লেখক আসামি ইলিয়াছ আলী
জামালপুরের বকশীগঞ্জে সরকারি কাজে বাধা ও সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মোহাম্মদ তামিমকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে করা মামলায় মেরুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দলিল লেখক ইলিয়াছ আলীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ মার্চ) দুপুরে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ইলিয়াছ মিয়াকে জামালপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে হাজির করলে বিচারক আতাউল্লাহ তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ইলিয়াছ বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের দলিল লেখক।
বকশীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকালে রেহেনা বেগম নামে এক নারী তার বোন রুবিনা বেগমের নামে হেবাদান দলিল করতে যান সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে। তাদের পক্ষে শহিদুল্লাহ নামে এক দলিল লেখক সাব-রেজিস্ট্রারের নিকট হেবাদান দলিলটি উপস্থাপন করেন। সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মো. তামিম শুনানিকালে হেবাদান দলিল বাবদ কোনো টাকা পেয়েছেন কি-না, জানতে চাইলে দাতা জমির টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেন।
সাব-রেজিস্ট্রার দলিল লেখক শহিদুল্লাহকে বলেন, হেবাদান করতেও যখন দাতা-গ্রহীতার মধ্যে টাকা লেনদেন হয়েছে, সে কারণে এটা সাব কবলা করলে সরকার বড় ধরনের রাজস্ব পাবে। রাজস্ব আদায়ের কথা বলায় শহিদুল্লাহ দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি আলী হাসান খোকাকে এজলাসে ডেকে আনেন। তিনিও দলিলটি সম্পাদন করতে সাব-রেজিস্ট্রারকে চাপ প্রয়োগ করেন। সাব-রেজিস্ট্রার আবারও সরকারের রাজস্বের বিষয়টি বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আলী হাসান খোকা।
এ সময় তিনি বাইরে গিয়ে আরও ১৫-২০ জন দলিল লেখককে ডেকে সাব-রেজিস্ট্রারের খাসকামরায় ঢুকে দলিল, অবিকল নকল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন এবং সাব-রেজিস্ট্রারকে খাসকামরায় অবরুদ্ধ করেন। খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা-পুলিশ সাব-রেজিস্ট্রার তামিমকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান মো. তামিম বাদী হয়ে হত্যার হুমকি ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ এনে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি ফিরোজ মিয়া, সাবেক সভাপতি আলী হাসান খোকা, দলিল লেখক শহিদুল্লাহসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে বকশীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার তামিমের দেওয়া অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার ৫ নম্বর আসামি দলিল লেখক ইলিয়াছ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।