সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪৭ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৮:৩৮ পিএম
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাইস মিল থেকে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরবরাহকৃত চালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও সরবরাহ মূল্য সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রবা ফটো
বাজারে সিন্ডিকেটের কারণে সরকারের দেওয়া দামের চেয়েও বেশি দামে ধান কেনাবেচা হয়। এতে বাজারে চালের দাম বাড়ে। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন কর্মকৌশল হাতে নিয়েছে সরকার।
আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে বাজারজাতকৃত চালের বস্তায় ৭ তথ্য নিশ্চিত করতে হবে মিলারদের। নয়তো জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আনা হবে তাদের।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকালে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাইস মিল থেকে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সরবরাহকৃত চালের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, উৎপাদন ও সরবরাহ মূল্য সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
বাজারে সরবরাহকৃত প্রতিটি চালের বস্তায় যেসব তথ্য নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে সেগুলো হলো- বস্তায় ধানের জাতের নাম, প্রস্তুতকারক, ঠিকানা, জেলা, নিট ওজন, উৎপাদনের তারিখ ও মিল গেট মূল্য লেখা থাকতে হবে। এই ৭ তথ্য না পেলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ছাড়াও মিল মালিকদের তাদের গোডাউনে ধান-চাল মজুদের সক্ষমতার পরিমাণ জানাতে হবে। সেই সক্ষমতার তথ্য যাচাই-বাচাই করা হবে। এমনকি মিলে কী পরিমাণে মজুদ রয়েছে প্রতি সপ্তাহে প্রশাসনকে জানাতে হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিভিন্ন মিল মালিক ও খুচরা ব্যবসায়ীরা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বক্তারা বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করতে পারলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চাল মজুদ করে দাম বাড়াতে পারবেন না। বাজারে চালের দাম বাড়লে মিল গেট থেকে কত নির্ধারণ করা হয়েছে তা বের করা যাবে।’
জামালগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘মিলে এখন পুরোনো চাল নেই। বাজারে ক’দিন পরে নতুন চাল আসবে। এতে কেউ বলতে পারবেন না, আগে কেনা চাল এজন্য বস্তায় ৭টি নির্দেশনা নেই।’
গোবিন্দগঞ্জ বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহিম আলী বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সিদ্ধান্তগুলো খুবই ভালো। বস্তার গায়ে দাম, মিলের নাম, উৎপাদন তারিখ লেখা থাকলে কেউ কারসাজি করতে পারবে না।’
মিল মালিক জিয়াউল হক বলেন, ‘এটি বাস্তবায়ন হলে বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কমবে। বড় বড় কোম্পানির মালিকরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়ায়, তাদের নাম সামনে আসে না। শুধু মিল মালিকদের নাম সামনে আসে।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে, চাল নিয়ে যাতে কোনো কারসাজি না হয় সেজন্য সব ব্যবসায়ী, মিল মালিকদের নিয়ে সভা করে বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে মিল গেটেই চালের বস্তায় ধানের জাতের নাম, মূল্যসহ আরও কয়েকটি বিষয় লিখে দিতে বলা হয়েছে। এগুলো যারা উল্লেখ করবে না তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘পাটের বস্তায় ৭টি বিষয় লিখতে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুদ, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন আইন ২০২৩ এ বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে একই আইনের ধারা ৬ ও ৭ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে সুনামগঞ্জের সব ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা করবেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাসসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ী, মিল মালিকবৃন্দ।