লক্ষ্মীপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৬:১৩ পিএম
আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:০০ পিএম
রায়পুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডা. মঞ্জুরুল আলম। ফাইল ফটো
লক্ষ্মীপুরে রায়পুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার ডা. মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলা করেছেন পৌরসভা কার্যসহকারী মহিউদ্দিন বিপু। তবে মামলাটি রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট ইচ্ছাকৃতভাবে করিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মঞ্জুরুল আলম।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে রায়পুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মঞ্জুরুল আলম মেয়রের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা মেয়রকে বক্তব্য দিতে বাধা দেয়।
মঞ্জুরুল আলম রায়পুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ কেরোয়া এলাকার বাহাদুর বাড়ির বাসিন্দা ও পেশায় হোমিও চিকিৎসক।
বুধবার (২৭ মার্চ) কথা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মঞ্জুরুল আলম ও রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাটের সঙ্গে।
মঞ্জুরুল আলম জানান, রায়পুর থানা মসজিদের বিপরীত পাশে তার এবং সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা সৈয়দ আহম্মদের জমি রয়েছে। পুরোনো ভবন ভেঙে সেখানে যৌথভাবে তাদের একটি ৯ তলা ভবন নির্মাণাধীন। ভবনের উঠার জন্য নিচতলায় যথেষ্ঠ পরিমাণ জায়গা রেখে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো নোটিস ও তথ্য ছাড়াই ৪ মার্চ পৌরসভার লোকজন এসে তা ভেঙে দেয়। ঘটনার সময় তিনি ও তার অংশীদার সৈয়দ আহম্মদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। খবর পেয়ে তিনি এসে সিঁড়ি ভাঙার কারণ জানতে চান। কোনো নোটিস ও তথ্য ছাড়াই সিঁড়ি ভাঙায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং ঘটনাটি লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নকে জানান। এমপি নয়ন বিষয়টি মীমাংসা করার আশ্বাস দিলে তিনি থানায় অভিযোগ দেননি। ওইদিন রাতেই তিনি ওমরাহ করার জন্য রায়পুর থেকে চলে যান। ওমরাহ থেকে ফিরে তিনি জানতে পারেন তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাকে মেয়র ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বলেছে। আমি রায়পুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার। অন্যায় করলে দেশের আইন অনুযায়ী আমিও শাস্তি পাব। সিঁড়ি ভাঙার দিন কোনো মারামারি হয়নি। সিসি ক্যামেরায় তার প্রমাণ আছে। পরদিন ঘটনাস্থলে ছিলামই না। এরপরও আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে।’
রায়পুর পৌরসভার মেয়র গিয়াস উদ্দিন রুবেল ভাট বলেন, ‘পথচারীদের হাঁটার জায়গা না রেখেই মঞ্জুরুল আলমরা পৌর আইন ভেঙে সিঁড়ি নির্মাণ করেছে। খবর পেয়ে পৌরসভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কয়েকজন সেখানে যায়। ওই সিঁড়ি ভাঙাও হয়নি। কিন্তু তিনি উচ্ছৃঙ্খল কথাবার্তা বলেন আমাদের লোকজনকে। এনিয়ে আমি কোনো মামলা করিনি। তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন। জনস্বার্থে পৌর কর্তৃপক্ষ কাজ করে থাকে। তখন নোটিস করার সুযোগ থাকে না। তিনি আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে কোনো মুক্তিযোদ্ধার ঝামেলা হয়নি। ব্যক্তি মঞ্জুরুল আলম আমার লোকজনের সঙ্গে ঝামেলা করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সোয়া ১টার দিকে মোবাইলফোনে পৌরসভার কার্যসহকারী মহিউদ্দিন বিপু বলেন, ‘আমরা নোটিস দিয়েছি। কিন্তু তারা নোটিস মানেনি। পৌরসভার প্রকৌশলীসহ ৪ মার্চও নোটিস নিয়ে যাই। কিন্তু তারা আমাদের মারধর করে। এ ব্যাপারে কোনো মীমাংসা হয়নি। এজন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় মামলা করেছি।
রায়পুর থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, ‘আদালত আমাদের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলাটি তদন্ত চলছে। সঠিক সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।’