× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিপন্ন বাঘা বনপাল

আ ন ম আমিনুর রহমান

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪ ০৯:৫৩ এএম

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৯ পিএম

 সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে মাটিতে বসা বাঘা বনপাল প্রজাপতি। ছবি : লেখক

সিলেটের টিলাগড় ইকোপার্কে মাটিতে বসা বাঘা বনপাল প্রজাপতি। ছবি : লেখক

ঘটনাটি ২০১৫ সালের ২২ মার্চের। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের বহিঃপরীক্ষক হিসেবে এসেছি। পরীক্ষা শেষে দুই-তিন জন শিক্ষককে সঙ্গে নিয়ে পাশের টিলাগড় ইকোপার্কে একটু ঢুঁ মারতে গেলাম যদি কোনো পাখি-প্রাণী-প্রজাপতির দেখা মেলে। পার্কটি একেবারে ছোট নয়। আবহাওয়াও চমৎকার। তবে দুপুর হয়ে যাওয়ায় পাখিগুলো বড় বড় গাছের বেশ উঁচুতে অবস্থান করছে। তাই ওদের তেমন কোনো ভালো ছবি তুলতে পারলাম না। 

তবে পাখির ভালো ছবি তুলতে না পারলেও প্রজাপতি দেখলাম অগণিত। কমপক্ষে দুই ডজন। কী তাদের রঙের বাহার? ওদের ওড়াউড়ি ও ছবি তুলে মন ভরে গেল। বেশকিছু দুর্লভ ও বিরল প্রজাপতিও দেখলাম। ছবি তুলতে তুলতে একসময় দুই টিলার মাঝখানে চলে এলাম। এখানে বেশকিছু প্রজাপতি উড়ছে। ওদের পিছু নিতে নিতে হঠাৎই একটি ভিন্ন রকমের প্রজাপতিকে মাটিতে বসে থাকতে দেখলাম। এরকম প্রজাপতি আগে কখনও দেখিনি। কাজেই এটা আমার জন্য নতুন! পতঙ্গটি উড়ে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত ক্যামেরার শাটারে ক্লিক করে গেলাম। 

আমার দেখা নতুন এই পতঙ্গটি এদেশের এক বিরল ও বিপন্ন প্রজাপতির। এর কোনো বাংলা নাম নেই। ইংরেজি নাম টাইগার পামফ্লাই (Tiger Palmfly)। তবে গোষ্ঠীর নাম বিবেচনায় ও ইংরেজি নামের অনুবাদে বাঘা বনপাল বলা যায়। নিম্ফালিডি বা চারপেয়ে গোত্রের এই সদস্যের বৈজ্ঞানিক নাম অ্যালাইমনিয়াস নেসিয়া। দেশের উত্তর-পূর্ব অর্থাৎ সিলেট ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল বা চট্টগ্রাম বিভাগে প্রজাপতিটি দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশকিছু দেশে এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি রয়েছে। 

এটি মোটামুটি মাঝারি থেকে বড় আকারের প্রজাপতি। প্রসারিত অবস্থায় ডানার বিস্তার ৭৫ থেকে ৮৫ মিলিমিটার। এটি শেতালকুঁচি (Glassy Tiger) প্রজাপতির অনুকরণকারী অর্থাৎ হঠাৎ দেখলে এটিকে শেতালকুঁচি বলে ভুল হতে পারে। প্রজাপতিটির ডানার ওপরাংশ কালো, তার ওপর রয়েছে লম্বা নীলচে-সবুজ দাগ। সামনের ডানার শীর্ষে চার বা পাঁচটি ফুটকি রয়েছে। অন্যদিকে পেছনের ডানার পেছন দিকে উপপ্রান্তীয় সাদা ফুটকি থাকে। পুরুষের ডানার নিচের দিকে সূক্ষ্ম লালচে-বাদামি রেখা থাকে। স্ত্রী প্রজাপতির ক্ষেত্রে ডানার নিচের অংশ বাদামি দাগছোপে পূর্ণ। পক্ষমূল বিস্তৃতভাবে গাঢ় বাদামি হয়ে থাকে। পেছনের ডানায় ছোট্ট লেজ দেখা যায়। 

এরা মিশ্র চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। সচরাচর স্বল্প উচ্চতায় দেখা যায়। ফেব্রুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ওড়াউড়ি করে। এদের জীবনচক্র সম্পর্কে তেমন একটা তথ্য জানা যায়নি। স্ত্রী সচরাচর নারিকেল (কোকোস নুইসিফেরা), উইন্ডমিল পাম (ট্র্যাচিকারপাস ফরচুনি), ম্যাকআর্থার বা হারিক্যান পাম (টাইকোস্পারমা ম্যাকআর্থারি) ইত্যাদি গাছে ডিম পাড়ে। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা