মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪ ২২:৩৯ পিএম
আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার। প্রবা ফটো
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় এনজিও সংস্থা আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের এক মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে ‘কিস্তির বইয়ের হিসেবের পাতা ছিড়ে গড়মিল করে’ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২২ মার্চ) এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ওই এনজিওর সুবিধাভোগী সদস্য সিদ্দীকা বেগম।
অভিযুক্ত লিলি বেগম আদ-দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের জায়গীরহাট শাখার ৭ নম্বর লতিবপুর ইউনিয়নে কর্মরত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার লতিবপুর ইউনিয়নের আদ দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে ঋণ নেন বাতাসন লতিবপুর গ্রামের খোকা মিয়ার স্ত্রী সিদ্দীকা বেগম। নিয়মিত মাসিক কিস্তিতে লোন পরিশোধ করে আসছিলেন তিনি। গত বছরের এপ্রিল মাসে কিস্তি পরিশোধের সময় ১৫০০ টাকা একবার ও তার কিছুদিন পর ৪৫০০ টাকা দিয়ে এপ্রিল মাসের কিস্তি পরিশোধ করে সিদ্দীকা বেগম। কিন্তু হিসাবের সময় ১৫০০ টাকা এপ্রিল মাসের কিস্তি হিসেবে খাতায় তুলে ৪৫০০ টাকা মে মাসের কিস্তিতে দেখিয়ে মোট ৬০০০ টাকা বকেয়া কিস্তি হিসাবের খাতায় লিখে মাঠকর্মী লিলি বেগম। পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্দীকা বেগম লিলি বেগমকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, ‘আপনি আমাকে দুইমাসে ৬০০০ টাকা দিয়েছেন জন্যই আপনার কিস্তির টাকা এখনো বাকি আছে। আর কিস্তির বইয়ের পাতা আপনিই ছিড়েছেন।’
সিদ্দিকা বেগম বলেন, “আমার কাছে টাকা ছিল না জন্য এক মাসের বুধবারে লিলি ১৫০০ টাকা নেয়। তার কয়েকদিন পর ওই মাসের বাকি ৪৫০০ টাকা আমি জমা করি। হিসাব অনুযায়ী আমি কিস্তির টাকা পরিশোধ করে আবারও লোন নিতে চাই। তখন আমাকে জানানো হয় আপনার টাকা পরিশোধ হয়নি। আমি তখন বাড়তি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এরপর আমাকে লোন দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে লোনের আবেদন ফরম এবং কিস্তির বইসহ ৯০০০ টাকা নেয় তারা। কিস্তির বই জমা নিয়ে বইয়ের পাতা খুলে হিসাব বানিয়ে সাইন দিয়ে আমাকে কিস্তির বই ফেরত দেয়। এবং বলা হয় ‘তোমার লোন হবে না। ৯০০০ টাকা নিয়ে তোমার লোনের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।’ এভাবে প্রতারণা করে আমাকে লোন না দিয়ে ৯০০০ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে আদ দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার ও মাঠকর্মী। আমি এই প্রতারণার প্রতিবাদ করছি জন্য আমাকে ম্যানেজার চেয়ার তুলে মারতে আসছিল। অফিসের মহিলাদের দিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছে। আমি এই প্রতারণার বিচার চাই।”
লিলি বেগম বলেন, ‘ওনার কাছে টাকা ছিলো না জন্য উনি একমাসে ১৫০০ টাকা দিয়েছে। আরেকমাসে ৪৫০০ টাকা দিয়েছে। এখন উনি অস্বীকার করছে। আমি অগণিত মানুষের কিস্তি তুলি। কেউ আমার নামে এমন দূর্নাম দিতে পারে নাই। কিস্তির বইয়ে স্পষ্টভাবে পুরো হিসেব লেখা আছে। আমি কিস্তির বইয়ের পাতা কেনো ছিড়ব।’
আদ দ্বীন ওয়েলফেয়ার সেন্টার জায়গীরহাট শাখার ম্যানেজার রশিদুল ইসলাম বলেন, আমি কেনো মারতে যাবো। ওই মহিলার কিস্তি বইয়ে হিসেব সঠিকভাবে লেখাই আছে। উনি কারো কথা শুনেন না। শুধু অফিসে লোকজন নিয়ে আসে। কেউ আমাদের ভুল ধরতে পারে নাই। আমাদের এরকম কোন রিপোর্ট নাই যে আমরা কিস্তির টাকা তুলে আত্মসাৎ করব। কিস্তির বইয়ে পাতা কম থাকতেই এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমরাই মামলা করব ওই মহিলার নামে।’
এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে ইউনিয়ন বিট পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’