× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

২৫ বছর ধরে নদীপাড়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবায় ভাসমান হাসপাতাল

মাদারীপুর সংবাদদাতা

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৯ পিএম

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪ ১৯:০১ পিএম

২৫ বছর ধরে নদীপাড়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে হাসপাতাল জীবনতরী। প্রবা ফটো

২৫ বছর ধরে নদীপাড়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে হাসপাতাল জীবনতরী। প্রবা ফটো

জীবনতরী। একটি লঞ্চের নাম। তবে এটি যাত্রী পরিবহনের লঞ্চ নয়। এটি একটি ভাসমান হাসপাতাল। ২৫ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নদীপাড়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে জীবনতরী। যেখানে মাত্র ৫০ টাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে অসহায় মানুষরা। 

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে হাজার হাজার মানুষকে সেবা দেওয়া জীবনতরী লঞ্চটি দেড় মাস ধরে নোঙর করা মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর। হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি সংস্থার কর্মকর্তারাও।

ভাসমান হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, এখানে ন্যূনতম টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয় নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের। মাদারীপুর সদর উপজেলার পুরাতন কাজীরটেক ফেরিঘাট এলাকায় দেড় মাস ধরে ইমপ্যাক্ট জীবনতরী ভাসমান হাসপাতালটি আড়িয়াল খাঁ নদের ওপরে নোঙর করে রাখা হয়েছে। এই হাসপাতালে প্রতিদিনই স্বাস্থ্যসেবা নিতে ভিড় করছে শত শত মানুষ। মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছে রোগীরা। স্বল্প টাকায় হাতের কাছে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা পেয়ে খুশি তারা।

ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে ২৫ বছর ধরে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। সব মানুষকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনাই মূল লক্ষ্য বলে জানান কর্মকর্তারা। তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চারজন নার্সসহ মোট ৩২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী ২৪ ঘণ্টাই হাসপাতালটিতে কর্মরত রয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রোগী দেখছেন চিকিৎসকরা। গত জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে আগামী জুন মাসের শেষ পর্যন্ত।

নদনদীতে ভাসমান অবস্থায় নাক-কান গলা ও চোখের অপারশেন, জন্মগত ঠোঁটকাটা, হাত-পা বাঁকা ঠিক করা, ভাঙা অঙ্গের চিকিৎসা, চোখের অপারেশনসহ জটিল রোগের চিকিৎসায় বছরের পর বছর কাজ করে যাচ্ছেন এ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

ট্রাকস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ভাসমান হাসপাতালে সেবা নিতে আসা নূপুর বেগম বলেন, ‘অন্য জায়গায় ডাক্তার দেখাতে ৫০০-১০০০ টাকা ফি লাগে। আর ভাসমান হাসপাতালে মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছি, এটা তো গরীবের জন্য সুসংবাদ।’

জাফরাবাদ এলাকা থেকে আসা আরেক রোগী সুমন হাওলাদার বলেন, ‘৫০ টাকা দিয়ে চোখের ডাক্তার দেখানোর পর ২০০ টাকার বিনিময়ে পরীক্ষা করিয়েছে। এখন চোখের সমস্যার সমাধান পেয়েছি। আমাদের জন্য এটি একটি বড় পাওয়া।’

ভাসমান হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ৭০ বছরের বৃদ্ধা হামিদা বেগম বলেন, ‘এখানে বেশি টাকা লাগে না। সবার মুখে মুখে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। তাই ছুটে এসেছি। এখানকার চিকিৎসকরাও ভালো। রোগীর সমস্যা শুনে তারা ওষুধ লিখে দিয়েছে।’

ইমপ্যাক্ট জীবনতরী ভাসমান হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোফাজ্জেল হোসাইন বলেন, ‘এ হাসপাতালে তিনটি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। আমি দেখি নাক, কান ও গলা। অন্য আরও দুজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। এখানে মাত্র ৫০ টাকা ফির বিনিময়ে রোগী দেখা হয়। জটিল রোগী হলে নির্দিষ্ট সময়ে অপারেশনের জন্য বলা হয়। সাশ্রয়ী টাকায় ভাসমান হাসপাতালে অপারেশনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।’

আরেক চিকিৎসক ডা. রিয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘জন্মগত হাত-পা বাঁকা রোগীর চিকিৎসা এখানে করানো হয়। এখানে অল্প খরচে অপারেশন হয়। মূল উদ্দেশ্য হলো, নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ যাতে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আসতে পারে, সেজন্য এ চিকিৎসা ব্যবস্থা।’

ডা. সুজল আলী বলেন, ‘চোখের সমস্যা নিয়ে এখানে আসা রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে। ৫০ টাকার টিকিট কেটে প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পারে রোগীরা। পরে প্রয়োজনবোধে কম টাকায় চোখের ফ্যাকো অপারেশনও করানো হয়।’

ইমপ্যাক্ট জীবনতরী ভাসমান হাসপাতালের প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘নদনদীতে ভাসমান অবস্থায় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৩২ জন মানুষ নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকি। মানবতার সেবা দেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য। নদনদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ বেশিরভাগই তুলনামূলক দরিদ্র হয়। তাদের পক্ষে বেশি টাকা খরচ করে শহরে গিয়ে আধুনিক চিকিৎসা নেওয়া কঠিন, তাই তাদের সুবিধার্থে হাতের কাছেই আমরা ২৫ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছি। এক এক এলাকায় দুই থেকে ছয় মাস আমরা অবস্থান করে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা