× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

৮৫ শিক্ষার্থীর জন্য ১ শিক্ষক মেঝেতে চলে পাঠদান

কামরুল ইসলাম, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৫:১২ পিএম

আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫৪ পিএম

ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী এক হাজারেরও বেশি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক আছেন মাত্র ১২ জন। এর মধ্যে একজন প্রশিক্ষণে রয়েছেন। সে হিসাবে এখানে গড়ে ৮৫ শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক। অথচ জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ৩০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে একজন থাকার কথা। সংকট রয়েছে শ্রেণি কক্ষেরও। মেঝেতে বসে চলে পাঠদান।

স্থানীয় বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫২ সালে একটি টিনের ঘরের মাধ্যমে ভট্টপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৯৩ সালে টিনশেট ভবন থেকে দ্বিতীয় তলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়টিকে উপজেলার মডেল বিদ্যালয় করা হয়। ২০১৯ সালে আরও একটি দ্বিতীয় তলা নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়। এখন দুটি ভবন মিলিয়ে শ্রেণিকক্ষ রয়েছে ১১টি, একটি করে  হলরুম অফিস কক্ষ। সংকটের কারণে হলরুমটিও শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিতে ১০১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০২৩ সালে ছিল ৯০৩ জন। ছাড়া ২০২২ সালে ৯২৬, ২০২১ সালে ১০০৮, ২০২০ সালে ৮৭৬ ২০১৯ সালে ৮৪৩ জন শিক্ষার্থী ছিল। প্রতি বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। সে অনুপাতে বাড়েনি শ্রেণিকক্ষ, বেঞ্চসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা। শিক্ষক শ্রেণিকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। বাড়তি শিক্ষার্থীদের সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের।

প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠদান হয় সকালের শিফটে। আর বিকালের শিফটে তৃতীয়, চতুর্থ পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করা হয়। প্রতিটি শ্রেণির চারটি শাখা রয়েছে। আর প্রতিটি শাখায় গড়ে ৯৮ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিতি থাকে। ১২ জন শিক্ষক মিনিটও বিশ্রাম না নিয়ে ধারাবাহিকভাবে পাঠদান করেন। এতে শিক্ষকদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ছাড়া বিদ্যালয়টি ৩৩ শতাংশ জায়গায় অবস্থান হলেও ২০০৪ সালে একাংশে উপজেলা রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ করা হয়। ফলে জায়গা সংকটও দেখা দিয়েছে।

প্রধান শিক্ষক বিআর বিলকিস বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে কাঙ্ক্ষিত পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। একজন শিক্ষককে দুই শিফটে ১০টি করে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে শিক্ষকরা কোনো রকমের বিশ্রামের সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের ওপর শারীরিক মানসিক চাপ যাচ্ছে। ছাড়া সংকট রয়েছে শ্রেণিকক্ষেরও। যে কারণে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রাক-প্রাথমিকের কক্ষের মেঝেতে পাঠদান করতে হচ্ছে।

তৃতীয় শ্রেণির সায়মা, খাদিজাসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমাদের মেঝেতে বসে ক্লাস করতে খুব সমস্যা হচ্ছে। ঘাড় নিচু করে লিখতে পড়তে হয়। এতে ঘাড় ব্যথা করে। আমাদের নতুন ভবন হলে সমস্যার সমাধান হবে। আমরা নতুন ভবন চাই।

সরেজমিন দেখা যায় প্রতিটি শ্রেণিকক্ষেই দুজনের বেঞ্চে বসতে হচ্ছে তিন থেকে চার জন করে। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে।

সহকারী শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘একজন শিক্ষককে টানা ১০টা ক্লাস নিতে হচ্ছে। প্রতিদিন টানা ক্লাস করতে করতে আমরা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।

বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে বসার জায়গা নেই। একজনের ঘাড়ের ওপর আরেকজনকে বসতে হয়। শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনুপাতে শিক্ষক নেই। তাই পাঠদানও ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘শিক্ষকসহ নানা সংকটের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলত রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য অনেক আগেই বরাদ্দ হয়েছে। জায়গা সংকটে ভবন করা যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ে জন শিক্ষককে নিয়োগ দিয়ে সংকট সমাধানের চেষ্টা চলছে।

ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিক্ষক সংকট শ্রেণিকক্ষের সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হবে।

সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, ‘ভট্টপুর মডেল বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণে বরাদ্দ হয়েছে। তবে জায়গা সংকটে ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। দ্রুত বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। ছাড়া বিদ্যালয়ের জায়গা থেকে উপজেলা রিসোর্স সেন্টারটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা