রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১০:০৩ এএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৯:৫০ পিএম
কুড়িগ্রামে টিসিবির চালে পোকা পাওয়া গেছে। প্রবা ফটো
কুড়িগ্রামে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) প্যাকেজ মূল্যে বিক্রি পণ্যে দুর্গন্ধ ও পোকাযুক্ত চাল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জেলার সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নে এ ধরনের চাল বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ভোক্তারা। দুর্গন্ধ ও পোকাযুক্ত চালের বিষয়ে ভোক্তারা আপত্তি তুললেও আমলে নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
নিম্নমানের চাল বিক্রির অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও এর দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন টিসিবি ডিলার মেসার্স ত্রিরত্ন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রকিব-উদ-দৌলা। তিনি বলেন, ‘ভোক্তাদের অভিযোগ ও আপত্তির কথা জানিয়ে আমরা বারবার খাদ্য বিভাগকে ভালো মানের চাল দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা যেমন চাল দেন, আমরা তেমনটাই বিক্রি করি।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, বেলগাছা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালে গ্রামে গত শনিবার ও রবিবার ৫২৫ টাকা প্যাকেজ মূল্যে ২ লিটার তেল, ২ কেজি ডাল, ১ কেজি ছোলা ও ৫ কেজি করে চাল বিক্রি করা হয়। অন্যান্য পণ্যে সমস্যা না থাকলেও ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা চালে দুর্গন্ধ ও পোকা ছিল। খাওয়ার উপযোগী না হওয়ায় অনেকে এসব চাল বিক্রি করে দিয়েছেন।
কালে গ্রামের টিসিবি কার্ডধারী সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘একে তো চালে দুর্গন্ধ, তার ওপর চালে অসংখ্য পোকা হেঁটে বেড়াচ্ছে। চালে দুর্গন্ধ এত বেশি যে তা খাওয়ার উপযোগী নয়। এসব চাল খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। আমি না খেয়ে রেখে দিছি।’
কুড়িগ্রাম রেলস্টেশন এলাকার বাসিন্দা টিসিবি কার্ডধারী মাহাবুব হোসেন ও মনিরন বেগমের বাড়িতে গিয়ে একই ধরনের চাল পাওয়া যায়। তারা বলেন, ‘এই চাল খাওয়া যায় না। এগুলা রান্না করে খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবে।’
একই এলাকার বাসিন্দা মিনি রানী বলেন, ‘টিসিবি থেকে কেনা চালে দুর্গন্ধ আর পোকা। এই চাল খাওয়া যায় না। আমি আরেকজনসহ বিক্রি করে দিছি।’
টিসিবি ডিলার রকিব-উদ-দৌলা বলেন, ‘আমি শুধু শনিবার পণ্য বিক্রি করেছি। রবিবার আমি করিনি। গ্রাহকরা আমাদের প্রায়ই অভিযোগ করেন। আমরা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বলেছি, আমাদের ভালো চাল দিতে। আমরা গোডাউন থেকে চাল নিয়ে আসি না, তারা পাঠিয়ে দেয়। গোডাউন থেকে যেমন চাল পাঠিয়ে দেয়, আমরা তেমনই বিক্রি করি। এতে আমাদের কিছু করার থাকে না। যখনই নতুন চালের সঙ্গে পুরোনো চালের বস্তা পাঠানো হয়, তখনই এমন অভিযোগ ওঠে। আমরা বলেছি, আমরা এভাবে দুর্নাম নিতে রাজি না।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল কাবির খান বলেন, ‘আমরা ওয়ারেন্টি অনুযায়ী পেছনের সারি থেকে চাল দিয়ে থাকি। কিন্তু সেসব চাল অবশ্যই খাওয়ার উপযোগী হতে হবে। পোকা ও দুর্গন্ধযুক্ত চাল বিতরণের অভিযোগ এখনও পাইনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ ধরনের চাল বিতরণ হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাবারের অনুপযোগী চাল বিক্রির কোনো সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘চালে সমস্যা থাকার অভিযোগ আমার কাছেও এসেছে। কোনো ভুক্তভোগীর কাছে নিম্নমানের চাল থাকলে নমুনা সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’