ফেনী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ২১:১১ পিএম
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪ ০০:০০ এএম
ফেনী কলেজে ছাত্রলীগের মরধরে আহত এক সাধরণ শিক্ষার্থী। প্রবা ফটো
ফেনী সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে গণইফতার কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। এ সময় ছাত্রলীগের মারধরে ৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। সোমবার (১৮ মার্চ) বিকালে ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ফেনী কলেজের বিবিএ শিক্ষার্থী আলী আহাম্মদ ফোরকান, বিএসসির শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম, এমরান হোসেন ও গণিতের শিক্ষার্থী আবদুল মোহাইমিন আজিম।
শিক্ষার্থীরা জানান, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির ওপর ‘বিধিনিষেধ’ আরোপের প্রতিবাদে সোমবার ফেনী কলেজ আঙ্গিনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গণইফতার কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী, ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মসজিদে আসরের নামাজ শেষে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। খবর পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিবের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চান। এর কিছুক্ষণ পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও কলেজছাত্র সংসদের ভিপি তোফায়েল আহমেদ তপু। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্রিকেট ব্যাট ও স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে আজিম নামে এক শিক্ষার্থীকে কলেজের একটি কক্ষে আটকে রেখে অন্যদের বের করে দেওয়া হয়। ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজ গেটে এলে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।’
আলী আহাম্মদ ফোরকান বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাদের বাধায় ইফতার মাহফিল পণ্ড হয়ে যায়। তাদের হামলায় কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’
আবদুল মোহাইমিন আজিম বলেন, ‘ইফতারে অংশ নিতে এলে আমাদেরকে ব্যাট-স্ট্যাম্প দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। একপর্যায়ে আমাকে আটকে রাখার আধঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়। ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি।’
কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি নোমান হাবিব বলেন, ‘শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কলেজে ইফতার কর্মসূচির আয়োজন করে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে গণইফতার নামে একটি আয়োজন দেখতে পাই। পরে সেখানে গিয়ে দেখি তারা জড়ো হতে থাকে। বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় তাদেরকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।’
ফেনী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও কলেজছাত্র সংসদের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপু বলেন, ‘ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসে অরাজকতা করতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে গণইফতারের আয়োজন করে। বিষয়টি কলেজ প্রশাসন ও ছাত্র সংসদের কেউ জানত না। নেতাকর্মীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে কলেজে গিয়ে তাদের সরিয়ে দেই।’ তবে সেখানে কাউকে পেটানো হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে একটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। ঝামেলার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে, সেখানে গিয়ে কাউকে পায়নি। এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’