জামালপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১২:১০ পিএম
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১৩:৪০ পিএম
হৃদয় মিয়া (বাঁয়ে), ছালমা আক্তার মীম ও শামীম মিয়া। প্রবা ফটো
জামালপুরের বকশীগঞ্জে এক নারীকে স্ত্রী দাবি করে দুই ব্যক্তির মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। দুজনই দাবি করছেন, তারা ওই নারীর বৈধ স্বামী। রবিবার (১৭ মার্চ) এমন ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার নান্দাইল সদর ইউনিয়নের ভাটিচারিয়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে হৃদয় মিয়া দেড় বছর আগে ঈশ্বরগঞ্জ থানার সরিষা ইউনিয়নের সরিষা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে ছালমা আক্তার মীমকে বিয়ে করেন। তাদের সংসার জীবন শান্তিতেই চলছিল।
কিন্তু গত ৫ মার্চ স্বামীর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন মীম। নিখোঁজের পর থেকেই স্বামী হৃদয় মিয়া স্ত্রীকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। ১৫ মার্চ মীম হৃদয় মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের আওয়ালপাড়া গ্রামে সাহা মিয়ার ছেলে শামীম মিয়ার কাছে আটক রয়েছেন।
খবর পেয়ে হৃদয় মিয়া রবিবার (১৭ মার্চ) আওয়ালপাড়ায় গিয়ে শামীমের বাড়ি থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ শহরে নিয়ে আসেন। এ সময় শামীম হৃদয় মিয়ার পথ অবরুদ্ধ করেন এবং মীমকে শামীম তার স্ত্রী দাবি করে দুজনে ধস্তাধস্তি শুরু করেন।
পরে স্থানীয়রা আসল ঘটনা জানতে তাদের তিনজনকে নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। সালিশে মীম তার হৃদয় মিয়ার সঙ্গে চলে যেতে চান বলে জানান। এ সময় শামীম মিয়া উপস্থিত লোকজনকে একটি কাবিননামা দেখিয়ে জানান, ছালমা আক্তার মীম তার পূর্বের স্বামী হৃদয় মিয়াকে তালাক দিয়েছে। তালাকের তিন দিন পর মীমকে সে বিয়ে করেছে।
শামীম মিয়ার দাবি, মীম তার বিবাহিত স্ত্রী। কিন্তু মীমের দেওয়া তালাকনামার কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি তিনি। তারপরও সালিশে উপস্থিত মানুষের সামনেই মীম ও তার স্বামী হৃদয় মিয়াকে মারার হুমকি দেয় এবং একপর্যায়ে জোর করে সবার সামনেই মীমকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় শামীম মিয়া।
হৃদয় মিয়া জানান, বকশীগঞ্জ উপজেলার আওয়ালপাড়া গ্রামে যাওয়ার পর আমি স্ত্রীর সন্ধান পাই। তাকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা অফিসের সামনে আসার পর কয়েকজন লোক আমাদের গতিরোধ করে। পরে সালিশ বসিয়ে উপস্থিত লোকজন আমার স্ত্রীকে শামীমের হাতে তুলে দেয়। পরে প্রকাশ্যে শামীম উপস্থিত লোকের সামনেই আমার স্ত্রীকে নিয়ে নিজ বাড়িতে চলে যায়। এখন আমার স্ত্রী কোথায় এবং কী অবস্থায় আছে আমি জানি না। তারা যেকোনো সময় আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলতে পারে। আমি আমার স্ত্রীকে উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় নেব।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি স্পষ্ট কিছু জানি না। কেউ আমার কাছে বিচার নিয়ে এলে আমি ন্যায়বিচার করতে বাধ্য হব। প্রয়োজনে থানা পুলিশের সহায়তা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করব।