সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৪ ১১:১৯ এএম
আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪ ২০:৩৫ পিএম
প্রতীকী ছবি
নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে চারজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে গ্রামবাসী। তা ছাড়া আরও একজনকে আহত করা হয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বাঘড়ি এলাকায় রবিবার রাত ২টার দিকে তাদের হতাহত করা হয়। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) শেখ বিল্লাল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- জেলার আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া জালোকান্দি এলাকার নবী মিয়ার ছেলে রহিম মিয়া, একই এলাকার মজিদ হোসেনের ছেলে নবী হোসেন ও সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুরের সুখেরটেক এলাকার আমান মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন। আহত মোহাম্মদ আলী আড়াইহাজারের জালোকান্দি এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন বলেন, সোনারগাঁ উপজেলার কাজহরদী গ্রামে প্রথমে ১০-১২ জনের একদল লোক ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়। এ সময় গ্রামবাসী মাইকে ঘোষণা দিয়ে ডাকাতদের ধাওয়া করে। ডাকাতদলের সদস্যরা পালিয়ে বাঘড়ি গ্রামের দিকে যাওয়ার পর বাঘড়ি, কাজহরদী, নানাখী, কাজিরগাঁওসহ কয়েকটি গ্রামের লোকজন চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। উত্তেজিত গ্রামবাসী গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত এবং দুজন গুরুতর আহত হয়। আহতদের প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে জাতীয় অর্থোপেডিক (পঙ্গু) হাসপাতালে নিলে আরও একজনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে।
উপজেলার কাঁচপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, রাতে বাঘড়ি বড়বিলে কয়েকজন অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখতে পান স্থানীয়রা। তাদের গতিবিধি দেখে ডাকাত বলে সন্দেহ করেন তারা। তখন স্থানীয় মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। ফলে কয়েকটি গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোটা, লোহার রড ও টর্চলাইট নিয়ে বিলের চারদিক ঘিরে ফেলে। গ্রামবাসীর ধাওয়া খেয়ে তারা বিলের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় উত্তেজিত গ্রামবাসী বিলের মধ্যেই তাদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়।
এলাকাবাসীকে ডাকাত হত্যার ঘটনায় উত্তেজিত ও আনন্দিত দেখা গেছে। দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘ডাকাতদের অত্যাচারে শান্তিতে ঘুমাতে পারি না। গত শনিবার রাতে কাজহরদী এলাকার দুই বাড়িতে ডাকাতি হয়। এ সময় বাধা দিলে একজনকে কুপিয়ে জখম করে ডাকাতরা।’
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘নিহত রহিম মিয়ার নামে আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ থানায় একাধিক ডাকাতির মামলা রয়েছে। নিহত নবী হোসেন ও আহত মোহাম্মদ আলীর নামেও আড়াইহাজার থানায় ডাকাতি প্রস্তুতির মামলা রয়েছে।’ নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিয়মিত মামলা হবে। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, নিহত জাকির হোসেন ডাকাত দলের সর্দার ছিলেন। তার নামে কয়েকটি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।’