চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৪ ২০:০১ পিএম
চট্টগ্রামে মাদক কারবারিসহ হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামিদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাতটি থানা ও ১২টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামে মাদক কারবারিসহ হত্যা ও অস্ত্র মামলার আসামিদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাতটি থানা ও ১২টি ওয়ার্ড কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ টাকার বিনিময়ে এসব কমিটি ঘোষণা করেছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাতে ফেসবুকে এসব কমিটি ঘোষণা করা হয়।
শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলেছেন কমিটির নেতাদের একাংশ। কমিটির সাতজন সহ-সভাপতি, তিনজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুইজন সাংগঠনিক সম্পাদক এই অভিযোগ অভিযোগ তুলেছেন। লিখিত বক্তব্যে সহ-সভাপতি সুজিত দাশ বলেন, গত ১৪ মার্চ রাত ১টা ৪৫ মিনিটে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আওতাধীন সাতটি থানা ও ১২টি ওয়ার্ড কমিটির ঘোষণা ফেসবুকে আসে। দেবাশীষ নাথ দেবু ও আজিজুর রহমানের আজিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে অদৃশ্য শক্তির ইন্ধনে এসব কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করে হাইব্রিড, অনুপ্রবেশকারী, অস্ত্র-মাদক কারবারিদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এসব কমিটিতে অস্ত্র, খুন, মাদক মামলার আসামি যেমনি রয়েছে তেমনি এক থানার নাগরিককে অন্য থানার কমিটিতে রাখা হয়েছে। এমনকি একই ব্যক্তিকে থানা ও ওয়ার্ড উভয় কমিটিতে রাখা হয়েছে। বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে জড়িত এরূপ ব্যক্তিকেও কমিটিতে রাখা হয়েছে। এতে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের গঠনতন্ত্রের ধারা ০৮. ২২, ২৩, ২৬, ২৭ ও ৩৪ (খ) সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করা হয়েছে। তাই এসব কমিটি দ্রুত বাতিল চাই।
এক প্রশ্নের উত্তরে সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মূলত টাকা দিয়ে এসব কমিটি দেওয়া হয়েছে। আপনারা খোঁজ নিলেও এসব জানতে পারবেন। ২০২২ সালের ৯ মার্চ ২০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণার পর থেকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক লাগামহীন স্বেচ্ছাচারিতা এবং একপেশে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের বিপদগ্রস্ত করেছেন। পরে এসব বিষয় আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের অবহিত করলে গত ৪ সেপ্টেম্বর আমাদের ২০ জনকে কেন্দ্রে তলব করা হয়। সেখান থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে চট্টগ্রামে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশনা দেয়। এর প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৫টি থানা ও ৪৪টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে সম্মেলন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফরম বিতরণ ও জমা নেওয়া হয়। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী অন্তত ৮৫০ জন ফরম পূরণ করে জমা দেন। এরপর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কোনো সভা না করেই রাতের আঁধারে সাতটি থানা ও ১২টি ওয়ার্ড কমিটি ফেসবুকে ঘোষণা করেছেন, যা চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ। বিষয়টি আমরা কেন্দ্রে অবহিত করেছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব কমিটি বাতিল করা না হলে ঢাকা-চট্টগ্রামে কাদের মদদে এসব কমিটি ঘোষণা করেছে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বর্তমান স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি যথাক্রমে-দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ, মনোয়ার জাহান মনি, মুহাম্মদ আজিজ মিসির, আব্দুর রশিদ লোকমান, মিনহাজুল আবেদিন সায়েম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুদ্দিন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও সরফরাজ নেওয়াজ চৌধুরী রবিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাসুদ খান ও মো. সালাউদ্দিন।
ঘোষিত সাতটি থানা কমিটি হলো চান্দগাঁও, চকবাজার, পতেঙ্গা, সদরঘাট, বন্দর, পাহাড়তলী ও আকবরশাহ। ১২টি ওয়ার্ড কমিটি হলো ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ড, ১৬ নম্বর চকবাজার, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা, ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ি, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি, ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী, ১২ নম্বর সরাইপাড়া, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ও ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড।