কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৬:০২ পিএম
আপডেট : ১৫ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
মো. সাগর হোসেন। প্রবা ফটো
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডসহ কিশোর গ্যাংয়ে জড়িয়ে পড়ায় সন্তানকে ত্যাজ্য করেছেন মো. সিরাজুল ইসলাম নামে এক বাবা। সিরাজুল ইসলাম উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। আর ঘোষিত ত্যাজ্যপুত্র মো. সাগর হোসেন তার বড় ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) লক্ষ্মীপুর নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে হাজির হয়ে ৩০০ টাকা মূল্যের নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামার মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র হিসেবে ঘোষণা করেন তিনি।
লক্ষ্মীপুর জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম মাহমুদ অ্যাফিডেভিটের বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।
অ্যাফিডেভিটের বরাতে তিনি জানান, সিরাজুল ইসলামের ঔরসজাত সন্তান সাগর হোসেন। সাগর বাবা-মার অবাধ্য হয়ে কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে ইতোমধ্যে সিরাজুল ইসলামের কয়েক লাখ টাকা ক্ষতিসাধন করাসহ নানা সম্মানহানিকর কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। বিষয়টি ছেলেকে বারবার সংশোধন হওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করলেও এতে কোনো প্রকার সংশোধন হয়নি তার ছেলে সাগর।
এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সিরাজুল ইসলাম কিছু দিন আগে নিজেই সাগরের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সাগর কিছু দিন কারাগারে থাকার পর সবকিছু ভুলে ভালো হয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বাবা নিজেই ছেলের জামিন করান। কিন্তু জেল থেকে বের হয়ে ফের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে এলাকায় প্রকাশ্যে বহু অপরাধ কর্মকাণ্ড চালায় সে।
একপর্যায়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে ধারালো দা ছেনি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয় সাগর। সর্বশেষ পরিবারের কাউকে না জানিয়ে একজন দুই সন্তানের জননীকে বিয়ে করে। এমতাবস্থায় নিজের ও পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে ছেলেকে ত্যাজ্যপুত্র করেন সিরাজুল।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ছেলেকে পড়ালেখা, ব্যবসাসহ সব রকম কাজ করানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে সবকিছু নষ্ট করে বিপথগামী হয়ে পড়েছে। পরিবারের কেউ তার কাছে নিরাপদ নয়। সম্প্রতি দুই সন্তানের জননী বয়স্ক এক নারীসহ চারটি বিয়ে করেছে সে। সমাজে আমার সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দিয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে তাকে ত্যাজ্য করে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে তার সব ধরনের কর্মকাণ্ড, দায়-দেনা ও যে কোনো ধরনের অপরাধের জন্য আমি ও আমার পরিবারের কেউ দায়ী থাকবে না। এখন থেকে সে আমার সন্তান নয়। বিষয়টি আমি আদালতের মাধ্যমে ঘোষণা করছি।’