চুয়াডাঙ্গা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৭:৪১ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৮:৫৯ পিএম
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের গেদে বন্দরের শূন্য রেখায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিক অভিষেক কুমারকে হস্তান্তর করা হয়। প্রবা ফটো
পাঁচ বছর কারাগারে থাকার পর ভারতীয় নাগরিক অভিষেক কুমারকে পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার দর্শনা এবং ভারতের গেদে বন্দরের শূন্য রেখায় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
মানসিক ভারসাম্যহীন অভিষেক বাংলাদেশের রাজশাহী কারাগারে বন্দি ছিল ৫ বছর। ৪০ বছর বয়সি অভিষেক কুমারের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বরাকাও জেলার গান্ধীনগর থানার জারিদি গ্রামে। তার আধার কার্ড নম্বর ৮৫৯৯ ৪৯৯১ ৮০১৪।
বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে তাকে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়। ২০২২ সালের ২২ মার্চ সুরক্ষা সেবা বিভাগ বহিরাগমন-১ থেকে ভারত প্রত্যাবাসনের চিঠি পাঠায়। কিন্তু অভিষেকের পরিবারের সন্ধান না পাওয়ায় দায়িত্বশীল কারও কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা একাত্তর টিভির জেষ্ঠ্য চিত্রসাংবাদিক ও সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি বাংলাদেশ মো. শামসুল হুদার প্রত্যাবাসন বিষয়ক বেশ কিছু সাফল্যের কথা জানতে পেরে অভিষেককে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ জানান। সেই মতে হুদা রাজশাহী জেলখানার জেলারের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিষেকের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। তারপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে মাত্র ৭২ ঘণ্টায় অভিষেকের মা পুস্পা দেবী ও বোন নিতু দেবীকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হন।
দর্শনা সীমান্তে হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের চিত্রসাংবাদিক মো. শামসুল হুদা, অভিষেকের মা পুস্পা দেবী, কাকা মুকেশ কুমার সিনহা ও ভাই পংকজ কুমার সিনহা উপস্থিত ছিলেন।
চিত্রসাংবাদিক মো. শামসুল হুদা বলেন, ‘প্রযুক্তির সহায়তায় মাত্র ৭২ ঘণ্টায় তার ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়। তবে অভিবাসন প্রত্যাবাসন জটিলতায় আরও ৬ মাস লেগে যায় হস্তান্তর প্রক্রিয়া করতে। দু’দেশের বন্দিদের সাজাভোগ শেষে নিজ দেশে পরিবারের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়া স্বল্প সময়ে সহজতর করা দরকার।’
অভিষেকের মা পুস্পা দেবী বলেন, ‘অভিষেক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ি ছেড়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরই মধ্যে ছেলের শোকে মারা যান অভিষেকের বাবা। দুই দেশের সরকার ও শাসসুল হুদা সাহেবের প্রচেষ্টায় আমার ছেলেকে ফেরত পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পতাকা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবির দর্শনা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার মন মোহন, দর্শনা আইসিপি কমান্ডার সুবেদার এনামুল হক, হাবিলদার সাকার উদ্দিন, দর্শনা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আব্দুর রহমান, দর্শনা ইমিগ্রেশন ইনচার্জ এসআই আতিক, এএসআই মোমিন প্রমুখ।
ভারতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, গেঁদে বিএসএফ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার এসি বিতাশা, এস আইপি মুর্খার্জি, এসআই মজুমদার, গেদে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ জেসি দে, কাস্টমস কর্মকর্তা রামাতার পি যাদব, কৃষ্ণগঞ্জ থানার এএসআই তন্ময় দাস, ডিআইবি সাধন মন্ডল, রেডক্রস প্রতিনিধি চিত্তরঞ্জন প্রমুখ।