বগুড়া অফিস
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৩:১৬ পিএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৬ পিএম
বগুড়ায় বুধবার শুরু হয়েছে করতোয়া নদী পুনঃখননের কাজ । শহরের মাদলা সেতু এলাকায়
বগুড়া শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা করতোয়া নদীর মাত্র ১৭ কিলোমিটার পুনঃখনন শুরু করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে শহরের মাদলা সেতু এলাকায় এ খননকাজের উদ্বোধন করেন বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তফা আলম নাননু।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় করতোয়া নদীর ১৭ কিলোমিটারের পাশাপাশি সংলগ্ন সুবিল খাল এবং অটো খাল নামে দুটি খালের ২৭ কিলোমিটার খনন করা হবে। ‘বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও তৎসংলগ্ন এলাকায় করতোয়া নদী পুনঃখনন ও ডান তীরে স্লোপ প্রটেকশন কাজ’ নামে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা।
তবে পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা নদীর মাত্র ১৭ কিলোমিটার অংশের খনন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, করতোয়া নদীর নাব্য ফেরাতেই ১২৩ কিলোমিটার অংশ খনন করা প্রয়োজন। এজন্য প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে। তবে বিপুল ব্যয়ের সংস্থান করতে না পারার অজুহাতে সেই প্রকল্প ঝুলিয়ে রেখে মাত্র ১৭ কিলোমিটার খনন কোনো কাজে আসবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘করতোয়া নদী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পাউবো। প্রকল্পের আওতায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে বগুড়ার শিবগঞ্জ পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এবং তারপর শিবগঞ্জ থেকে দক্ষিণে শেরপুর উপজেলা পর্যন্ত মোট ১০৭ কিলোমিটার অংশ পুনঃখননের কথা বলা হয়। পাশাপাশি ইছামতী নদীর ৭২ কিলোমিটার ও গজারিয়া নদীর আরও ৩৪ কিলোমিটার অংশ পুনঃখননের প্রস্তাব করা হয়। ২ হাজার ৯৪২ কোটি টাকার ওই প্রকল্পটি ২০২৫ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদনই মেলেনি।
পাউবো সূত্র বলছে, প্রকল্পটি ব্যয়বহুল হওয়ায় তার অনুমোদন প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। প্রায় দুই বছরেও বড় ওই প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ২০২৩ সালের শুরুতে পাউবোর পক্ষ থেকে করতোয়া নদীর বগুড়া শহরের ১৭ কিলোমিটার অংশ এবং পাশের সুবিল খাল ও অটো খালের ২৭ কিলোমিটার অংশসহ মোট ৪৪ কিলোমিটার পুনঃখননের প্রকল্প নেওয়া হয়। ব্যয় ৪৭ কোটি টাকা হওয়ায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠাতে হয়নি। ২০২৩ সালের অক্টোবরে সেটি অনুমোদন পেয়ে যায়। এরপর টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদারও নিয়োগ করা হয়। মূলত সেই প্রকল্পেরই কাজ শুরু হলো।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘করতোয়ার নাব্য ফেরাতে হলে ১২৩ কিলোমিটার অংশের খনন প্রয়োজন। কিন্তু সেটি আমলে নেওয়া হচ্ছে না। মূল প্রকল্পের বাস্তবায়ন ছাড়া এভাবে ছোট একটি অংশ খনন করলে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না।’
জানতে চাইলে পাউবো বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, মাত্র ১৭ কিলোমিটার অংশ খনন করে পুরো নদীর নাব্য ফেরানো সম্ভব নয়। যেহেতু মূল প্রকল্পটি অনুমোদনে বিলম্ব হচ্ছে সে কারণে ছোট আকারে কাজ শুরু করেছি। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। আশা করছি এ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মূল প্রকল্পটির অনুমোদন হয়ে যাবে। তখন ১৭ কিলোমিটার অংশ বাদ দিয়ে কাজ করা হবে।’