কিশোরগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৪ ২১:৫৪ পিএম
আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৪ ০০:১৮ এএম
লাইনে দাঁড়িয়ে ১০টাকা লিটার দুধ কিনছেন এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা মানুষ। প্রবা ফটো
রমজান আসলেই যেখানে বেড়ে যায় নিত্যপণ্যের দাম। সেখানে মাত্র ১০ টাকা লিটার গরুর দুধ বিক্রি করছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের ব্যবসায়ী এরশাদ উদ্দিন। পুরো রমজানজুড়ে ‘সুষ্ঠু বণ্টনের স্বার্থে’ একটি পরিবারের কাছে দিনে এক লিটার দুধ বিক্রি করবেন তিনি। এবারে রমজানজুড়ে প্রায় দুই হাজার লিটার দুধ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ব্যবসায়ী।
রোজার প্রথম দিন থেকেই কম দামে দুধ কিনতে এরশাদের খামারে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। এলাকাবাসী বলছেন, রোজার মাসে বাজারে দুধ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা লিটার। বর্তমান ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে চড়ামূল্যে দুধ কেনা দরিদ্র মানুষের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই কম দামে দুধ কিনতে পেরে অনেক খুশি তারা।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নামমাত্র মূল্যে দুধ কিনতে মানুষের দীর্ঘ সারি। দুধ কিনতে আসা জাকির হোসেন বলেন, এরশাদের মহানুভবতায় রোজার মাসে দুধ খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। বাজার থেকে দুধ কিনা আমরা মতো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তিনি গত চার বছর ধরে আমাদের পাশে আছেন, দোয়া করি আল্লাহ তাকে সব সময় গরিবের পাশে রাখার তৌফিক দান করুক।
দেওপুর গ্রামের গৃহবধূ আমেনা খাতুন বলেন, রোজার মাসে সেহরির সময় একটু দুধ দিয়ে ভাত খাইতে পারলে প্রাণটা ভরে যায়। বাজার থেকে কিনা সম্ভব না। তাই ১০ টাকায় দুধ কিনতে পেরে ভালো লাগছে।
চার বছর আগে এরশাদ উদ্দিন নিজ এলাকায় জে সি অ্যাগ্রো ফার্ম নামে একটি খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে দুগ্ধ ও মোটাতাজাকরণের তিন শতাধিক গরু রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে ২০টি গরু দুধ দিচ্ছে। প্রতিদিন খামার থেকে ৭০ থেকে ৭৫ লিটার দুধ উৎপাদিত হচ্ছে। সেই দুধ তিনি ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যে কেউ তার খামার থেকে নামমাত্র ১০ টাকা লিটার দরে সর্বোচ্চ এক লিটার দুধ কিনতে পারবেন।
বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জে সি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে বলেন, রমজান এলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাট-বাজারগুলোতে এক কেজি দুধ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে নিম্নআয়ের মানুষের দুধ কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই।
তিনি বলেন, ‘আমি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছি। আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন। তাই সুযোগ পেলেই মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। একজন মুসলমান হিসেবে পবিত্র রমজানে রোজাদার মানুষকে সামান্য পরিমাণে হলেও দুধ দিতে পারছি বলে ভালো লাগছে।’