× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমন্ত্রণপত্রে ‘বঙ্গবন্ধু-প্রধানমন্ত্রীর ছবি না থাকায়’ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠান বন্ধ

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২৪ ১৩:১১ পিএম

আপডেট : ১১ মার্চ ২০২৪ ১৩:৩৮ পিএম

কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাইল ফটো

কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফাইল ফটো

স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি না থাকা, জাতীয় স্লোগান জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু না লেখা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম না দেওয়া এবং স্থানীয় এমপির ছবি স্কুলের অফিস কক্ষে না থাকায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় কেওয়া পশ্চিমখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজনে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগ করে জানান, রবিবার (১০ মার্চ) শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলেন। এ সময় তারা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরও করেন। তাদের হুমকিতে পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। 

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ফরিদা ইয়াসমিন।

তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার তিনি ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের পুরস্কার কেনার জন্য টঙ্গী গিয়েছিলেন। শ্রীপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর (৯ নম্বর ওয়ার্ড) ও শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আরিফুল ইসলাম সরকারসহ কয়েকজন ওই দিন দুপুর সোয়া ১টার দিকে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। তারা স্কুলে উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে দাওয়াতপত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় আরিফুল ইসলাম বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলেন। একপর্যায়ে তার সাথে থাকা অন্যরা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে সিঁড়ির নিচে ডেকে নিয়ে মারধর করেন।’

অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম সরকার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ছিলেন বলেও জানান ফরিদা ইয়াসমিন।

ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্রে দেখা যায়, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান, বরেণ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহমুদ হাসান মুকুল ও গাজীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল শ্রীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পারুল খানম। শ্রীপুর পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর (৯ নম্বর ওয়ার্ড) আমজাদ হোসেন অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

আরিফুল ইসলাম জানান, ‘বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার না করা, আওয়ামী লীগের স্লোগান জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু না থাকা, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম না দেওয়া, স্থানীয় এমপি (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর) ছবি স্কুলের অফিস কক্ষে না থাকা এবং আমন্ত্রণপত্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম দেওয়া হয়নি। অতীতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দাওয়াতপত্রে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নাম ছিল। কিন্তু এবারের দাওয়াতপত্রে তাদের নাম নেই। এরপর প্রধান শিক্ষক আপাতত অনুষ্ঠান বন্ধ রেখে ঈদের পর করবেন বলে জানিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচন পর্যন্ত বিদ্যালয়ে সাবেক সংসদ সদস্যের ছবি দেয়ালে ঝোলানো ছিল। নির্বাচনের পর স্থানীয় এমপি (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী) হলেও তার ছবি স্কুলের অফিস কক্ষে টানানো হয়নি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্যের অনুসারী হওয়ায় ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি করেছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলিনি কিংবা কোনো শিক্ষককে মারধরও করা হয়নি। মারধরের অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের কিছু ত্রুটি আছে। যে কারণে ওই ত্রুটি আড়াল করার জন্য তারা এসব বলছে। স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ পাবে। মারধর হলে তো স্কুলের শিশুরাও জানত এবং দেখত।’ তবে শিক্ষকের সাথে তর্ক হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন আরিফুল ইসলাম।

কেওয়া পশ্চিমখন্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি কামরুল ইসলাম বলেন, ‘কোমলমতি শিশুদের জন্য বছরে একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় শিশুরা কষ্ট পেয়েছে।’

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা জানান, এই বিষয়ে তিনি একটি অভিযোগ পেয়েছেন। তবে তিনি নতুন জয়েন করায় বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেখার কথা বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাতেমা নাসরিন জানান, স্কুলের ঘটনায় ইউএনও বরাবর দেওয়া অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছেন তিনি। তবে এই বিষয়ে ইউএনওর কোনো নির্দেশনা পাননি তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা