× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত নয় বেতাগী

সতর্কতা প্রচারের সাইরেনটি ৮ বছর ধরে অচল

সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী (বরগুনা)

প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১২:২৯ পিএম

আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৪ পিএম

দীর্ঘ ৮ বছর ধরে অচল রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে সতর্কবার্তা প্রচারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন। প্রবা ফটো

দীর্ঘ ৮ বছর ধরে অচল রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে সতর্কবার্তা প্রচারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন। প্রবা ফটো

আজ ১০ মার্চ, জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে যেখানে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি থাকার কথা সেখানে দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে আছে প্রস্তুতির অভাব। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে অচল রয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে সতর্কবার্তা প্রচারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পিছিয়ে আছে বেতাগী।

স্থানীয়রা জানান, দুর্যোগকালীন মহাবিপদ সংকেত বাজিয়ে মানুষকে সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য পলিফোনিক সাইরেন স্থাপনের আট বছরেও চালু হয়নি। পড়ে আছে অরক্ষিত অবস্থায়। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষের মধ্যে বিরাজ করে আতঙ্ক। এতে ভেস্তে যাচ্ছে সরকারি উদ্যোগ, যা দেখার কেউ নেই।

দেড় লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত একটি পৌরসভা ও সাতটি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত এ উপজেলায় ঝড়, বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সঙ্গে বদলে গিয়েছে দুর্যোগের ভয়াবহতা ও গতি-প্রকৃতিও। ক্রমবর্ধমান এমন দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত নয় বেতাগী উপজেলাবাসী। দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি উদ্যোগ বাড়ানোর কথা বলা হলেও তৃণমূল পর্যায়ে নেই এর কার্যকারিতা ও বাস্তবায়ন। 

বরগুনা রেড ক্রিসেন্টের আজীবন সদস্য ও বেতাগীর সবুজ কানন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুস সালাম সিদ্দিকী বলেন, জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসের মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণকে সচেতন করা। কিন্তু বেতাগীতে সতর্কবার্তা প্রচারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দুর্যোগকালীন চরম সংকটের সৃষ্টি হয়। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যেখানে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি থাকার কথা কিন্তু এখানে প্রয়োজনীয় তৎপরতার ঘাটতি রয়েছে।  

বেতাগী উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাদের। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। সে তুলনায় যে প্রস্তুতি থাকার কথা, তা এখানে নেই। 

জানা গেছে, ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে এই অঞ্চলে অসংখ্য প্রাণহানির পর ঘূর্ণিঝড় থেকে মানুষকে বাঁচাতে এবং মহাবিপদ সংকেতের প্রচারে ২০১৩ সালে সরকারের দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। বেতাগী উপজেলায় ২০১৪ সালের শেষদিকে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সঙ্গে একটি স্টিলের খুঁটিতে ছাদের সঙ্গে ৬টি মাইক সংবলিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পলিফোনিক সাইরেন স্থাপন করা হয়। সেখান থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান কার্যালয়ের নতুন ভবনে স্থানান্তরের পর বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পাশে পলিফোনিক সাইরেনটি অচল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

সাইরেনটি স্থাপনের সময় এটি ব্যবহারে উপকরণ হিসেবে ব্যাটারি ওয়্যারলেস সেট সিস্টেম দেওয়া হয়। ৮ বছর ধরে সেসব সরঞ্জামাদি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ের ফটোমেশিন কক্ষে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। বর্তমানে কারা এর দায়িত্বে সেটাও কেউ সঠিকভাবে বলতে পারছেন না।

সাইরেনটির আওয়াজ ৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে সক্ষম। কেবলমাত্র ৮নং মহাবিপদ সংকেত দেখা দিলেই সাইরেনটি বাজিয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে বাজানোর কথা। কিন্ত দুর্যোগ ঝুঁকি কমাতে স্থাপিত সাইরেনটি অচল হয়ে পড়ে থাকায় সাধারণের কোনো উপকারে আসছে না। 

বরগুনা জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ের বেতার যন্ত্রচালক বিজন দাস জানান, দুর্যোগকালীন সময় সংকেত প্রচারে এটি স্থাপন করা হয়। তবে এটি হস্তান্তর করা হয়নি। উপকূলীয় এলাকায় ২০১৩ সালে প্রকল্পটি শুরু হলেও প্রকল্পের শেষদিকে ২০১৫ সালে এখানে স্থাপনের কাজ হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে এটি আর হস্তান্তর করা হয়নি। 

স্থানীয়রা জানান, সুপার সাইক্লোন সিডরের চেয়েও ঘূর্ণিঝড় মোখা গতিপথ পরিবর্তন করে ভয়াবহ আকার ধারণের উপক্রম হয়। সেই সময়ও কোনো কাজে আসেনি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সাইরেনটি। পলিফোনিক সাইরেনটি স্থানীয়দের জন্য জরুরি হলেও আগামীতেও কাজে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। 

বেতাগী উপজেলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুর রব বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকে জেলেরা। কিন্তু পলিফোনিক সাইরেনটি অচল থাকায় সতর্কবার্তা পায় না তারা। সাইরেনটি চালু হলে জেলেরা উপকৃত হতো।  

বেতাগী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিএম ওলিউল ইসলাম বলেন, উচ্চ ক্ষমতার এই সাইরেন ৮নং মহাবিপদ সংকেত প্রচারে স্থাপিত হয়েছিল। এটির ক্ষমতা ৩ বর্গ কিলোমিটার হলেও বর্তমানে সাইরেনটি অকেজো।

বেতাগী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আহমদ বলেন, এখানে যোগদান করেছি খুব বেশিদিন হয়নি। এ সম্পর্কে আমার এখনও কিছু জানা নেই। তবে সব দুর্যোগকালীন সময়ের কথা বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ে সাইরেনটি সারানোর প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা