ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৪ পিএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২৩:৫০ পিএম
এসএসসি পরীক্ষার্থী মো. রিয়েল মিয়া। প্রবা ফটো
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ১৫ মিনিট দেরি করে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসায় পরীক্ষা দিতে পারেনি এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। বুধবার (৬ মার্চ) উপজেলার উচাখিলা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীর নাম- মো. রিয়েল মিয়া। সে মরিচারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগের ছাত্র।
জানা গেছে, উচাখিলা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে রিয়েল মিয়া। গত বছর বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ এই দুটি বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় এবছর সে ওই দুই বিষয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে। বুধবার ভূগোল ও পরিবেশ পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষায় অংশ নিতে নির্ধারিত সময়ে বাড়ি থেকে রওনা দেয়। পথিমধ্যে অনাঙ্ক্ষিতভাবে একটি গাছ ভেঙে রাস্তার ওপরে পরে যাওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রে আসতে তার ১৫ মিনিট দেরি হয়।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী রিয়েল মিয়া বলেন, ‘সকাল ৯টা ৪২ মিনিটে আমি উচাখিলা বাজারের অটো স্টেশনে নামি। সেখান থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে হেঁটে আসতে ২ থেকে ৩মিনিট সময় লাগে। আমি ৯টা ৪৫ মিনিটের দিকে পরীক্ষা কেন্দ্রে গেটে আসলে গেটম্যানের দায়িত্বরত স্কুলের দপ্তরি হারুন আমাকে প্রবেশ করতে দেয়নি। কোনো উপায় না পেয়ে আমি গেটের সামনে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে আমার স্কুলে চলে যাই।’
কান্না জড়িত কণ্ঠে পরীক্ষার্থীর বাবা সুরুজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে একটু সহজসরল প্রকৃতির। বাড়ি থেকে সঠিক সময়ে বের হয়ে যায়। কিন্তু রাস্তায় একটি গাছ ভেঙে পড়ে যাওয়ায় কেন্দ্রে পৌঁছাতে তার ১৫ মিনিট দেরি হয়। তাই আমার ছেলেকে কেন্দ্রের গেটে দায়িত্বরত হারুন নামের একজন ঢুকতে দেয়নি। পরীক্ষা দিতে না পেরে ছেলেটি শুধু কান্না করছে। ঘটনার জন্য গেটম্যান হারুনকে দায়ী করে বিশেষ ব্যবস্থায় তার পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মরিচারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শরাফ উদ্দিন বলেন, ‘ দুপুর ১টার দিকে বিষয়টি আমি জানতে পারি। পরীক্ষা শুরু হয় ১০টা থেকে। যদিও আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে উপস্থিত থাকার নিয়ম রয়েছে। ৯ টা ৪৫ মিনিটে যদি ওই শিক্ষার্থী কেন্দ্রে উপস্থিত হয় তাহলে তাকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়ার কথা। কিন্তু আসলে ঘটনা কি ঘটেছে তা আমি এখনই সঠিক বলতে পারছি না।’
এ বিষয়ে গেটম্যান হারুনকে জিজ্ঞাসা করলে এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। শুধু বলেছেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারব না। প্রিন্সিপাল স্যারকে জিজ্ঞেস করুন।’
এ বিষয়ে জানতে উচাখিলা উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আব্দুল আলিমকে বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি। তাদের মোবাইলে একাধিক কল দিলেও রিসিভ করেননি তারা।
পরীক্ষা কেন্দ্রের গেটে ছাত্রদের তল্লাশির দায়িত্ব পালনকারী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুল হক কাজল ও বদরুজ্জামান মিন্টু বলেন, ৯টা ৩০মিনিটে ওয়ার্নিং ঘন্টা বাজলে গেট খুলে দেওয়া হয়। তখন গেটে আমরা ১০ থেকে ১৫ মিনিট অবস্থান করে ছাত্রদের তল্লাশি করে কেন্দ্রে প্রবেশ করাই। কিন্তু এই সময়ে ওই ছাত্রকে আমরা লক্ষ্য করিনি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এর আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি। ইউএনও মহোদয়ও বিষয়টি অবগত আছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, ‘পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষার্থীর সঙ্গে নির্দেশনার বাহিরে যদি কিছু ঘটে থাকে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’