চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২০:০৮ পিএম
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২৪ ২১:৩৮ পিএম
চিনি পোড়া বর্জ্য নদীতে মিশে দূষিত হচ্ছে পানি। ভেসে উঠেছে মাছসহ নানা জলজ প্রাণী। প্রবা ফটো
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে চিনি পোড়া বর্জ্য নদীতে মিশে মাছসহ নানা জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। স্থানীয় জেলে ও পরিবেশবিদরা বলছেন, নদীর পানি দূষিত হয়ে যাওয়ায় এত মাছ মারা যাচ্ছে।
সোমবার কর্ণফুলী নদীর পাড়ে অবস্থিত রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের গুদামে আগুন লাগে। বুধবার (৬ মার্চ) তৃতীয় দিনেও আগুন পুরোপুরি নেভেনি। সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (চট্টগ্রাম) মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আগুন এখনও পুরোপুরি নির্বাপণ করা সম্ভব হয়নি। গুদামের ভেতরে এখনও আগুন জ্বলছে। আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ করতে আরও কিছু সময় লাগবে। আগুন নেভানোর জন্য আমাদের কাছে সম্ভাব্য যত কৌশল ছিল, আমরা সবগুলোই অ্যাপ্লাই করেছি। আমরা ফোম চার্জ করেছি, অনবরত পানি ছিটিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু চিনির আগুন হওয়ায় এখনও নির্বাপণ করা সম্ভব হয়নি।’
কারখানার আগুন নেভাতে যে পানি ব্যবহার করা হচ্ছে তা চিনি পোড়া বর্জ্য নিয়ে পড়ছে কর্ণফুলী নদীতে। এতে পোড়া তেলের মতো অপরিশোধিত চিনির বর্জ্য ভাসতে দেখা যাচ্ছে নদীতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ি মাছ ভাসছে। এর মধ্যে কিছু মরা আবার কিছু আধমরা। স্থানীয়রা হাত দিয়ে কেউবা জাল দিয়ে সেগুলো ধরছে।
মাছ ধরায় ব্যস্ত ছগির নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘সকাল থেকে বেশ কিছু আধমরা ও মরা মাছ ধরেছি। নদীর অনেকটা এলাকাজুড়ে মাছ ভাসছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘চিনি পোড়া বর্জ্য মিশ্রিত পানির কারণে বেশ কিছু মাছ ও কাঁকড়া মারা গেছে। আমাদের একটা দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করছে।’
মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তর নদী থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছে। অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুল হাসান বলেন, ‘পানিতে চিনির বর্জ্য মিশে যাওয়ায় দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গেছে। এতে জলজ প্রাণী হুমকিতে।’
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রায় ৩০টি ডাম্পট্রাক দিয়ে গলিত র-সুগার আমাদের নিজস্ব জায়গায় ডাম্পিং করা হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি র-সুগার যাতে নদীতে না পড়ে। আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। এর পরও ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো কিছু পানি গড়িয়ে নদীতে পড়েছে। এতে আমাদের দুঃখ প্রকাশ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’