চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ২১:৪৪ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪ ২১:৫৯ পিএম
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাত্র দুই মিনিটের ঝড়ে মাটিতে পড়ে গেছে ছয়-সাতটি বাগানের সব কলা গাছ। প্রবা ফটো
রমজান মাসের চাহিদা সামনে রেখে কলা চাষ করেছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সাজাহানপুর ইউনিয়নের শেখালীপুর রাবনপাড়া মাঠের চাষিরা। সঠিকভাবে পরিচর্যা করে গড়ে তুলেছিলেন কলার বাগান। ফলনও এসেছিল প্রায় সব গাছে। কিন্তু হঠাৎ করে আসা কয়েক মিনিটের প্রচণ্ড ঝড়ে তাদের স্বপ্ন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে কয়েক কোটি টাকার।
চাষিরা জানান, রাবনপাড়া মাঠে তারা প্রায় দুইশ বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছেন। সব গাছেই কলার ছড়া এসেছিল। কিন্তু পূর্ণ হওয়ার আগে সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ ঝড় আসে। মাত্র দুই মিনিটের ঝড়ে মাটিতে পড়ে গেছে মাঠের ছয়-সাতটি বাগানের সব গাছ। মাটিতে পড়ে থাকা কলা অপরিপক্ব থাকায় বিক্রি করা যাবে না। এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। দুইশ বিঘা জমতে অন্তত তিন কোটি টাকার কলা বিক্রির আশা করেছিলেন বলে জানান কৃষকরা।
চাষি তারেক রহমান বলেন, প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঋণ করে তারা চার বন্ধু মিলে কলার চাষাবাদ করেছিলেন। ফলনও হয়েছিল ভালো। আর কয়েক দিন পরই রোজার সময় বাজারজাত করতে পারতেন। কিন্তু তার আগেই দুই মিনিটের ঝরে সব তছনছ হয়ে গেল। কৃষক মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘সব শেষ হয়ে গেল। ১৯ লাখ টাকা ঋণ কিভাবে শোধ করব তা বুঝতে পারছি না। আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কোনো কিছু মাথায় আসছে না।’
এলাকার মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘মাগরিবের নামাজের সময় পশ্চিম দিক থেকে হঠাৎ করেই বাতাস বইতে শুরু করে। তীব্র জোরে বাতাস হয় দুই থেকে তিন মিনিট। ঘর থেকে বের হয়ে কলাবাগানে গিয়েই দেখি সব শেষ হয়ে গেছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন, ‘রাবনপাড়া মাঠের কয়েকটি কলাবাগানের সব গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে কৃষকদের মধ্যে হাহাকার বিরাজ করছে। কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে চাষিদের। সরকারের উচিত তাদের সহযোগিতা করা। কারণ তারা অনেক ঋণগ্রস্ত।’
পদ্মা নদীর ধারে ও বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যে হওয়ায় কলাবাগানের এমন ক্ষতি বলে জানাচ্ছে কৃষি বিভাগ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। তাদের প্রণোদনা দেওয়ার মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।’ কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রায় ৩৭৫ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হয়েছে।