বান্দরবান প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৮:০০ পিএম
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৪ ১৯:২০ পিএম
বান্দরবানের রুমা উপজেলা বেথেল পাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্টিত বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্টা কমিটি ও কেএনএফ এর সদস্যবৃন্দ। প্রবা ফটো
পাহাড়ের শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির দ্বিতীয়বার সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকাল পৌনে ১১টায় রুমা উপজেলার বেথেল পাড়ার কমিউনিটি সেন্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা এই বৈঠক ষ হয় বেলা সোয়া ১টায়। বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কাছে ছয় দফা দাবি জানিয়েছে কেএনএফ।
বৈঠকে ১৩ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতৃত্ব দেন কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। কেএনএফের ৮ সদস্যের নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালজংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার মুইয়া।
শান্তি প্রতিষ্টা কমিটির পক্ষে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. করিম, জেলা পরিষদের সদস্য কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, সিং ইয়ং ম্রো, সি অং খুমী, লালজার লম বম, সাংবাদিক উজ্জল তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
কেএনএফের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন, লাল-এংলিয়ান, পাস্টর ভানলিয়ান, গ্রাহাম বম, কয়াললিন বম, সাংপাহ খুমী, আজৌ লুসাই।
শান্তিপূর্ণ বৈঠক কেক কেটে উদযাপন করা হয়। প্রবা ফটো
শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কমিটির আহ্বায়ক ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা বলেন, ‘উভয় পক্ষ খুব সুন্দর পরিবেশে আন্তরিকভাবে আলোচনা হয়েছে। কেএনএফের দাবির মধ্যে যেগুলো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষে বাস্তবায়ন করা সম্ভব সেগুলো বাস্তবায়নে চেষ্টা করা হবে। যেগুলো সম্ভব নয় সেগুলোর ব্যপারে বার্তা সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
আগামী এপ্রিল মাসে আবারও বৈঠক হবে বলে জানান তিনি।
কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালজংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার মুইয়া বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে সংলাপে কুকি-চিন সম্প্রদায় বিশ্বাস করে এই আলাপ-আলোচনা ফলপ্রসু হবে।’
এর আগে গত বছরের ৫ নভেম্বর প্রথমবার সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল রুমা উপজেলা মুনলাই পাড়ায়। ওই বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন করে সংঘাতে না জড়ানোসহ উভয় পক্ষের মধ্যে ছয় দফা নিয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফা বৈঠকে এলাকায় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাসহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতারা।
২০২১ সালে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বান্দরবান- রাঙ্গামাটি সীমান্তে একটি পাড়ায় হামলার মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে এই সংগঠনটির সংঘর্ষে ৫ সেনা সদস্যসহ কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়। কেএনএফ’র ১৭ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ারও অভিযোগ উঠে কুকি চিনের বিরুদ্ধে। পাহাড়ে সংঘাত থামাতে গত বছরের মে মাসে গঠন করা হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।