× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভ্যাকসিনের অভাবে মারা যাচ্ছে মুরগি

সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী (বরগুনা)

প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৪ ১০:০৮ এএম

আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৪ ১০:৩৪ এএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

দেশের উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীর বিভিন্ন গ্রামে মুরগি ও কবুতরের রানীক্ষেত রোগ দেখা দিয়েছে।দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে ভ্যাকসিন নেই প্রাণিসম্পদ অফিস ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে। ভ্যাকসিন না পেয়ে প্রতিদিন খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন মুরগি পালনকারী গৃহস্থালী ও প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা। অসংখ্য মুরগি ও কবুতর মারা গেছে।

জানা গেছে, রানীক্ষেত মুরগির ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগে আক্রান্ত মুরগির শতকরা ৯০ ভাগই মারা যায়। তাই প্রতিরোধক হিসেবে নির্দিষ্ট বয়সে ছানাদের ভ্যাকসিন দিতে হয়। ৬ দিন বয়সে প্রথম ডোজ ও ২১ দিন বয়সে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।

প্রান্তিক পর্যায়ের ছোটখাটো খামারি ও গৃহস্থালী পর্যায়ে যারা অল্প পরিমাণে মুরগি পালন করে তাদের কথা বিবেচনা করে সরকার উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে রানীক্ষেতের ভ্যাকসিন সরবরাহ করে। প্রতি ১০০ ছানার ভ্যাকসিনের সরকার নির্ধারিত মূল্য ২৫ টাকা। তবে সুবিধাভোগীরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নেওয়া হয় ৩০ টাকা। যা বাইরে বেসরকারিভাবে ২০০-৩০০ টাকায় বিক্রি হয়। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শীতের শুরুতে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার আশঙ্কায় আগেভাগেই প্রতিটি উপজেলায় চাহিদা অনুযায়ী আরভিডি প্রতিষেধক (রানীক্ষেত রোগের ভাইরাস ভ্যাকসিন) সরবরাহ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে সাপ্লাইয়ের অভাবে তা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। 

তবে খমারিদের অভিযোগ, প্রণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তারা এসব প্রতিষেধকের একটি অংশ বাইরে বিক্রি করে থাকেন। ফলে প্রতি বছরই সংকটের সৃষ্টি হয়। এতে পোলট্রি গৃহস্থ ব্যক্তি ও খামারমালিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অবশ্য প্রণিসম্পদ বিভাগ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, জেলা প্রণিসম্পদ কার্যালয় থেকে সর্বশেষ গত ১২ নভেম্বর ১৩০ ইমপুল আরভিডি সরবরাহ করা হয়। এগুলো থেকে ২৮ হাজার মুরগি বা কবুতরকে টিকা দেওয়া সম্ভব (প্রতি ইমপুল ভ্যাকসিন দিয়ে ১০০ মুরগি বা কবুতরকে টিকা দেওয়া যায়)। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে এরপর থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়নি।

সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা আয়েশা বেগম জানান, তার ১০টি মুরগি সম্বল ছিল। সবগুলোই মারা গেছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে বারবার গিয়েও তিনি প্রতিষেধক পাননি। অফিসের লোকেরা বলেন বাইর থেকে কিনতে।

শুধু আয়েশা বেগমই নন, একই ধরনের অভিযোগ অনেকের। ভ্যাকসিন না থাকায় মুরগির রানীক্ষেতের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় শীতের শুরু থেকে উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়নে অসংখ্য মুরগি ও কবুতর মারা গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই প্রতিষেধক না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এমনই একজন বেতাগী পৌরসভার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, ‘প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। গত ১৫ দিনে প্রতিবেশীর কয়েকটি মুরগি মারা গেছে। বিকল্প হিসেবে প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বদ্ধির জন্য ওষুধ খাওয়াচ্ছি।’

নারগিস আক্তার নামে আরেকজন বলেন, ‘গত মাস থেকে ভ্যাকসিনের জন্য অপেক্ষা করছি। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে বেশ কয়েকবার লোক পাঠিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। তারা ফার্মেসি থেকে ভ্যাকসিন কেনার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্ত ফার্মেসির লোক বলছে দেশি মুরগির জন্য তাদের কাছে কোনো ভ্যাকসিন নেই।’

উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের একাধিক ক্ষুদ্র পোলট্রি খামারি জানান, শীতের শুরুতে মুরগি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় বেশি। প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে ভ্যাকসিন না পাওয়ায় বাইরে থেকে চড়া দামে কিনতে হয়। এ ছাড়া ভ্যাকসিন না পাওয়ায় এবারে অনেকেই খামারে মুরগির বাচ্চা তোলেননি। যারা তুলেছেন এর মধ্যে অনেকেরই শত শত মুরগি মারা গেছে। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফ হোসেন বলেন, ‘জেলায় সাপ্লাই না থাকায় আমাদেরকে তারা ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারেনি। তবে খুব দ্রুতই ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। আর ভ্যাকসিন বাইরে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। এসব অপপ্রচার। আমরা সঠিকভাবেই বিতরণ করি।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা