মিয়ানমার সংঘাত
কক্সবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৭ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৬:৪২ পিএম
নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারে সংঘর্ষের সময় ধোঁয়া দেখা যায়। প্রবা ফটো
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতে টানা বিকট শব্দের পর ব্যাপক ধোঁয়া দেখা গেছে। শনিবার (২ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা সীমান্তের ওপারে ধোঁয়া উড়তে শুরু করে, যা দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা গেছে।
হ্নীলা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের এলাকা বলিবাজার ও নাগাকুরাপাড়া। ওই দুই এলাকার মাঝামাঝি গ্রামে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করছেন হ্নীলা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ব্যবসায়ী তারেক মাহমুদ রনি।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার পর গোলাগুলির শব্দ কিছুটা কম শোনা গেছে। কিন্তু মধ্য রাতের পর থেকে গোলাগুলির শব্দের পাশাপাশি ভেসে আসতে থাকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। শনিবার ভোরের পর তা আরও বেড়ে যায়। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত আধা ঘণ্টা পর পর বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা গেছে। এর পরপরই দাউ দাউ করে জ্বলতে দেখা গেছে আগুন। যার ধোঁয়া দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেখা গেছে। এরপর থেকে কমতে শুরু করে ধোঁয়া।’
সীমান্তের লোকজন জানায়, মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যের মংডুর আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এপারে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, পৌর শহর ও সাবরাং কেঁপে উঠছে।
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে দুই পক্ষের মধ্যে লড়াইয়ের তীব্রতা দুই দিন ধরে বেড়েছে। নাফ নদের ওপারে বিস্ফোরিত মর্টার শেলের বিকট শব্দে এপার কেঁপে উঠছে। সীমান্ত এলাকার হাজারো মানুষ ক্ষেতখামারে যেতে পারছে না।’
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান শাহ জালাল বলেন, ‘মর্টার শেলের বিকট শব্দে এলাকায় কম্পন অনুভূত হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘন ঘন কম্পনে শিশুদের ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, অনেকে ভয়ে কান্নাকাটি করছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নের বিপরীতে নাফ নদের বুকে জেগে ওঠা তোতারদিয়া দুই সপ্তাহ আগে আরাকান আর্মি দখলে নেয়। এখন মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী সেটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘রাখাইনে নতুন করে গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত টেকনাফ সীমান্তে গুলি এসে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সতর্ক রয়েছে।’
তবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের মানুষ তিন দিন ধরে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছে না।
যদিও মিয়ানমারের রাখাইন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যদের তৎপর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।