× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ঠিকাদারের গাফিলতিতে ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের

সাইদুল ইসলাম মন্টু, বেতাগী (বরগুনা)

প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ১৪:১৪ পিএম

থমকে আছে করুনা বালিকা দাখিল মাদরাসা ভবনের নির্মাণ। প্রবা ফটো

থমকে আছে করুনা বালিকা দাখিল মাদরাসা ভবনের নির্মাণ। প্রবা ফটো

বরগুনার বেতাগীতে ঠিকাদারের গাফিলতিতে চার বছরেও শেষ হয়নি উপজেলার করুনা বালিকা দাখিল মাদ্রাসার একাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ। এতে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কক্ষসংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া নির্মাণের উপকরণ মাদ্রাসার আশপাশে ছড়িয়ে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনারও আশঙ্কা রয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মাদ্রাসায় একটি চারতলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভবনটি নির্মাণের জন্য ৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালীর গলাচিপার মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ দেওয়া হয়। দেড় বছর মেয়াদি ওই প্রকল্পের কাজ সাড়ে চার বছরে অর্ধেক শেষ হয়েছে। 

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবন নির্মাণের সময় মাদ্রাসার পুরোনো টিনশেড ভবন ভেঙে ফেলা হয়ে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলার চলছে পাঠদান। বিষয়টি জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের। তারা জানায়, ঠিকাদারের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও ভবনের কাজ শেষ করা যাচ্ছিল না। পরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর ভবনের কাজ কিছুটা চললেও পরবর্তী সময়ে আর তেমন অগ্রগতি নেই। তিন মাস ধরে কাজ বন্ধ পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। 

একাধিক শিক্ষকের অভিযোগ, কাজ শেষ করা তো দূরের কথা বরং ঠিকাদারের নির্দেশে তার লোকজন একাধিকবার রাতের আঁধারে ভবনের কাজে ব্যবহৃত মালামাল নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে তাদের বাধার কারণে নিতে পারেনি। 

অভিযোগ পাওয়া গেছে কাজের অনিয়মেরও। শুরু থেকেই নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। কংক্রিটের ঢালাই দেওয়ার পর পাটের বস্তা বা কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে ভেজানোর কথা থাকলেও তা করেননি ঠিকাদার। শুধু তা-ই নয় মাদ্রাসার নেওয়া বিদ্যুৎ ভবনের কাজে ব্যবহার করে এলেও ঠিকাদার বিল পরিশোধ করেননি। ফলে গত জানুয়ারি মাসে বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেওয়ায় আরেক ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থী মীম আক্তার বলে, ‘চার বছরেও নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় গাদাগাদি করে ক্লাস করছি। রুমের জানালা, দরজা ও ফ্যান নেই। অনেক সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি।’ 

মাদ্রাসার সুপার মুহাম্মদ আমীনুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত ভবন নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য বারবার অনুরোধ করছি। বিষয়টি নিয়ে প্রধান প্রকৌশলীসহ শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কয়েক দফা আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাচ্ছি না।’ 

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমান ফোরকান বলেন, ‘শুরু থেকেই ঠিকাদার বিরতি দিয়ে দিয়ে কাজ করছেন। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে ভবন নির্মাণকাজে দেরি হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কষ্ট দেখে একাধিকবার নির্মাণকাজ শেষ করার অনুরোধ করেছি, তাতেও সুফল পাওয়া যায়নি।’ 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী রেনু মণ্ডল ভবন নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘পারিবারিক সমস্যা, উপকরণের দাম বৃদ্ধি ও বরাদ্দ সংকটে কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। তাড়াতাড়ি নির্মাণকাজ শেষ করা হবে।’

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউএনও ফারুক আহমদ বলেন, ‘বিষয়টি জেলার মাসিক সমন্বয় সভায় উত্থাপন করেছি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’

জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথম দিকে ফান্ডে টাকার সংকট ও করোনা মহামারির কারণে কাজের ধীরগতি হয়েছে। একাধিকবার দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদার গাফিলতি করলে কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা