অধিবর্ষে জন্ম
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪ ২১:০৮ পিএম
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪ ২১:১১ পিএম
বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জিত চক্রবর্তীর ১৮তম জন্মদিন পালন করেছে তার পরিবার। প্রবা ফটো
৭২ বছর বয়সে এসে ১৮তম জন্মদিন পালন। এরকম বিরল ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছেন দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পূর্ব কাটাবাড়ী এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জিত চক্রবর্তী। তার আজ ১৮তম জন্মবার্ষিকী। এদিন উপলক্ষে আমন্ত্রণপত্র দিয়ে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়েছে দিনটি। জন্মদিন উপলক্ষে পূর্জা, প্রার্থনাসহ কেক কেটে দিবসটি পালন ও নৈশ্যভোজনের আয়োজন করা হয়েছে।
চার দিয়ে বিভাজ্য বছরগুলোকে অধিবর্ষ বলা হয়। এই অধিবর্ষ নিয়ে মানুষের মধ্যে রঙ-তামাশাও কম হয় না। বছরে একদিন বাড়া মানে বাড়তি খরচ। তেমনি এই দিনে জন্ম নিলে কিংবা বিয়ে করলে চার বছর পর পর উদযাপন করতে হয় দিনটি।
রঞ্জিত চক্রবর্তীর বড় ছেলে দেবাশিষ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমার বাবার ১৮তম জন্মদিন পালন করলাম। বিষয়টি অবাক করার হলেও বাস্তব। আমার বাবা অধিবর্ষে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যার ফলে চার বছর পর পর তার জন্মদিনটি ফিরে আসে। খুবই জাঁকজমকভাবে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে দিনটি পালন করেছি।’
দিবসটিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক দম্পতি সঞ্জীব চক্রবর্তী ও পাপিয়া চক্রবর্তী বলেন, রঞ্জিত চক্রবর্তী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। একই সঙ্গে তিনি একজন ব্যতিক্রম মানুষ যে কি-না ৭২ বছর বয়সে এসে ১৮তম জন্মদিন পালন করছেন। এটি খুবই বিরল ও ব্যতিক্রম ঘটনা।তার জন্মদিন উপলক্ষে আমাদেরকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এমন একটি দিনের স্বাক্ষী হতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকুক।’
রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, ‘১৯৫২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আমার জন্ম। অধিবর্ষের কারণে প্রতি চার বছর পর পর জন্মদিন পালন করছি। তাই আমার আজ ১৮তম জন্মদিন। এদিনটি উপলক্ষে আমন্ত্রণপত্র দ্বারা আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে নিমন্ত্রণ জানিয়ে পরিবার-পরিজনসহ কেক কেটেছি। পরে সবাই একসঙ্গে নৈশ্যভোজ করেছি। আমার জীবনের অন্যতম সেরা দিন ছিল দিনটি। আমি খুবই আনন্দিত।’
জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা রঞ্জিত চক্রবর্তী ১৯৫২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পৌর এলাকার পূর্ব কাটাবাড়ী গ্রামে জন্ম নেন। ১৯৭১ সালে ৭ নম্বর সেক্টর থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। দেশ স্বাধীনের পর তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। তারপর বদলি হয়ে দীর্ঘদিন দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান সহকারী হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করে ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অবসরে নেন। বর্তমানে তিনি তার নিজ জমি ও বাগান দেখভাল করছেন।
তিনি দুই ছেলের জনক। তার বড় ছেলে দেবাশিষ চক্রবর্তী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ফিল্ড কর্মকর্তা ও ছোট ছেলে অর্ণব চক্রবর্তী পড়াশোনা করছেন। তার সহধর্মিণী সবিতা ব্যানার্জি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত পরিদর্শিকা।