অগ্নিকাণ্ডে বুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু
প্রবা প্রতিবেদক, বরিশাল
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫২ পিএম
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৭ পিএম
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত বুয়েট শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন হারিস। ফাইল ফটো
রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিয়ান আমিন হারিস। শুক্রবার (১ মার্চ) বেলা পৌনে দুইটার দিকে নাহিয়ানের লাশ পৌঁছায় জন্মস্থান বরিশালে।
বরিশাল জিলা স্কুল থেকে পড়াশুনা করা নাহিয়ানের লাশবাহী গাড়ি প্রথমে জিলা স্কুলের পিছনে কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের সামনে রাখা হয়। এ সময় জিলা স্কুলের শিক্ষক এবং সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা শেষবারের মত নাহিয়ানের মুখ দেখেন।
এরপর লাশবাহী গাড়ি নিয়ে যাওয়া হয় নাহিয়ানের নগরীর বাসভবন পলিটেকনিক রোডে। বাসভবনের সামনে লাশবাহী গাড়ি রাখার পর নাহিয়ানের বাবা-মা বোন এবং স্বজনরাও শেষবারের মত তাদের সন্তানকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এ সময় কথা হয় নাহিয়ানের ফুফাতো ভাই বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিটের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. নাভিদ নূর এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ওর শরীরে বার্ন নেই। আমি যেটা শুনেছি, তাতে ধারণা করছি কার্বন মনোঅক্সাইডের কারণে সে মারা গেছে। এটা অসাবধানতা ঠিক না। যদি ভালো একটা ফায়ার এক্সিট থাকত তাহলে ছেলেটা হয়তো বেঁচে যেত।’
ডা. নাভিদ বলেন, ‘বেইলি রোডে অনেক নামকরা রেস্টুরেন্ট আছে। দেশবরণ্য লোকজন যায়। মানুষ সেখানে অনুষ্ঠান করে, অথচ ওখানে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। বাসার বাইরে যদি আমরা নিরাপদ না হই, এটা তো কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত। কোনো হোটেল অনুমোদন দেওয়ার সময় দেখা উচিত তাদের ফায়ার এক্সিট আছে কিনা। সব কিছু ঠিকমতো আছে কিনা।’
এসব কঠোরভাবে দেখা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ওকে হারানো মানে আমাদের একটা ফ্যামিলির লস না। একটা দেশের লস। বরিশাল জেলার লস। এ ছেলেটা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাংলাদেশে অনেক বড় সার্ভিস দিতে পারত। বাংলাদেশের ইনফ্রাকটেকচার ডেভলপমেন্টে কাজ করতে পারত। বাংলাদেশের গর্ভমেন্টও পেল না, আমরাও পেলাম না।’
নাহিয়ান আমিন হারিস পরিবারের গর্ব ছিল জানিয়ে ডা. নাভিদ জানান, ২০২০ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করে। ২০২২ সালে ঢাকা নটরডেম থেকে এইচএসসি পাশ করার পর বুয়েটে ভর্তি হয় নাহিয়ান আমিন হারিস।
বরিশাল জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত নাহিয়ানকে পড়িয়েছি। আমার সন্তানের চেয়েও প্রিয় ছিল হারিস। বরিশাল জিলা স্কুল শিক্ষকসহ সকলের নাহিয়ানকে নিয়ে স্বপ্ন ছিল, নাহিয়ান জিলা স্কুলকে বিশ্বের দরবারে পরিচিত করবে।’
শুক্রবার বিকাল ৫টায় বরিশাল সরকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট জামে মসজিদের সামনে নাহিয়ান আমিন হারিসের জানাজা নামাজ হয়। পরে নগরীর মুসলিম গোরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।