পুলিশের তাড়ায় ছাদ থেকে পড়ে আসামির মৃত্যু

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় হালিম মৃধা নামে এক ঠিকাদার পুলিশের তাড়া খেয়ে তিন তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয়েছেন। বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলার সবুজনগরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, দেনাপাওনা নিয়ে আদালতে দায়ের করা এক মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হালিম মৃধা। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়েছিল। নিহত ঠিকাদারের পরিবারের দাবি, পুলিশ ও মামলার বাদী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। 

নিহত হালিম মঠবাড়িয়া পৌর শহরের সবুজনগর মহল্লার আব্দুল মন্নান মৃধার ছেলে। দুই সন্তানের জনক তিনি। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে মরদেহ উদ্ধার করে বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঠিকাদার হালিম মৃধার সঙ্গে অপর ঠিকাদার মো. নূরুজ্জামান তালুকদারের টাকাপয়সা লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় ঠিকাদার নূরুজ্জামান তালুকদার আদালতে ঠিকাদার হালিম মৃধার বিরুদ্ধে সম্প্রতি একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মঠবাড়িয়া থানার পুলিশ বুধবার দিনগত রাত ১টার দিকে আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। এ সময় হালিম একই মহল্লায় বসবাসরত আপন বোন রুমি বেগমের বাসায় অবস্থান করছিলেন। পুলিশ গোপন সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঠিকাদার হালিম তিন তলা ভবনের ছাদে উঠে যান। পুলিশও ভবনের ছাদের দিকে তাকে তাড়া করে। এরপর কী ঘটেছে তা কেউ নিশ্চত করে বলতে পারছে না।

ঠিকাদার হালিম মৃধার মেজ ভাই মামুন মৃধা অভিযোগ করেন, পুলিশ রাত দেড়টার দিকে আমার বাসায় এসে আমাকে জোরজবরদস্তি করে বলে, আপনার বোনের বাসার পেছনে কী যেন পড়ার শব্দ হইছে। দ্রুত চলেন। এক প্রকার টেনেহিঁচড়ে পুলিশ আমাকে বোনের বাসার সামনে নিয়ে যায়। এ সময় মামলার বাদীকে ভবনের সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখি। পুলিশ আমাকে ভবনের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে ভাইয়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখি। এরপর পুলিশ আমার ভাই ও আমার বাসায় রহস্যজনক তল্লাশি চালায়। এ সময় ভাইয়ের হাত-পা ভাঙা ও মুখে রক্ত জখম দেখে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার আর কিছু মনে নেই।’

তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে তাড়া করে তিন তলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’ 

এ বিষয়ে মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত ঠিকাদারের মরদেহ ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মৃত ঠিকাদারের নামে দুটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। ঘটনার সময় টহলরত পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মারা যেতে পারেন তিনি। অন্য কোনো ঘটনা থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে। তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’