মৌলভীবাজার প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৮ পিএম
আপডেট : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:০৪ পিএম
সিলেটের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছিনতাই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রবা ফটো
মৌলভীবাজারে ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ছিনতাইকারী চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদর্শন কুমার রায়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার চন্দন ভাগ গ্রামের বেলাল আহমেদ ওরফে জাকির ওরফে জাকারিয়া মোল্লা, শাহপরান থানার মুক্তিরচক গ্রামের কামাল মিয়া, উসমানীনগর উপজেলার নাগেরকোনা গ্রামের হোসেন ওরফে তৌফিক এবং গোলাপগঞ্জ উপজেলার তেহিমগঞ্জ এলাকার মো. বাবুল আহমেদ।
পুলিশ জানায়, বেলাল আহমেদ ওরফে জাকির ওরফে জাকারিয়া মোল্লার বিরুদ্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র আইন ও ডাকাতির অভিযোগে সাতটি মামলা,কামাল মিয়ার বিরুদ্ধে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির অভিযোগে চারটি মামলা, হোসেন ওরফে তৌফিকের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানায় দুটি ডাকাতির মামলা এবং মো. বাবুল আহমদের বিরুদ্ধে সিলেটের মোগলাবাজার থানায় ডাকাতি ও দস্যুতার দুটি মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানা এলাকায় একটি ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে বের হওয়ার পর এক নারীর টাকা ছিনতাই করে এই চক্রের সদস্যরা। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি একই কায়দায় মৌলভীবাজার সদর থানা এলাকায় একটি ছিনতাই এবং ১৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে শ্রীমঙ্গল থানা এলাকায় দুজন চা-শ্রমিকের পেনশনের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় তারা। এসব ঘটনায় মৌলভীবাজার ও শ্রীমঙ্গল থানায় পৃথক মামলা দায়ের হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা সুদর্শন কুমার রায় বলেন, ‘প্রতিটি ঘটনায় ছিনতাইয়ের ধরন ছিল একই। মোটরসাইকেল দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা থামিয়ে অস্ত্রের মুখে টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুট করত তারা। এই ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য একটি বিশেষ অভিযানিক টিম গঠন করে পুলিশ। এই বিশেষ টিম গত কয়েক দিন ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত (সিসি টিভি ফুটেজ/ছবি) সংগ্রহ করে, সেগুলো বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আসামিদের শনাক্ত করে বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের সময় ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, নগদ টাকা ও লুণ্ঠিত সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা পুলিশকে জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা মূলত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী নারী ও বয়স্কদের টার্গেট করত এবং মোটরসাইকেল দিয়ে অটোরিকশা আটকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে টাকাসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যেত।